ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় জেলা বরগুনা। বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা এই জেলার বুক চিরে বয়ে গেছে বলেশ্বর, বিষখালী ও খরস্রোতা পায়রা নদী। ১৯৬০ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত জেলায় ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা হয়।

বর্তমানে এ বেড়িবাঁধের মধ্যে ২৯ কিলোমিটার ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। যা দিয়ে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাসে লোকালয় প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

পাউবো বরগুনা কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঝুঁকিপূর্ণ বাঁধের মধ্যে বরগুনা সদর উপজেলায় ১৫ স্থানে ৬.৩২০ কিলোমিটার, আমতলী উপজেলায় ৫.২২০ কিলোমিটার, তালতলীত উপজেলায় ১.৯৫০ কিলোমিটার, পাথরঘাটায় ৮.৫৫ কিলোমিটার, বামনা উপজেলায় ৬.৫১৫ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। পানির চাপে যেকোনো সময় এসব বাঁধ বিলীন হয়ে যেতে পারে।

পাথরঘাটা উপজেলার জিনতলা গ্রামের বাসিন্দা সোলায়মান জানান, ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাব এই এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধগুলোর খুব নাজুক অবস্থায় রয়েছে। এরমধ্যে আবার আরও একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানতে যাচ্ছে। তাই এই এলাকায় অন্তত ১০ হাজার মানুষ চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

একই উপজেলার পদ্মা গ্রামের বাসিন্দা নিজাম বলেন, আমাদের এখানে মাটির কোনো বাঁধ নেই। জিওব্যাগে মাটি ভরে বাঁশের বেস্টনি তৈরি করে তা দিয়ে পানি প্রবাহে বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করা হচ্ছে। এ দিয়ে কোনোভাবেই পানি প্রবাহ বন্ধ করা সম্ভব নয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড বরগুনার নির্বাহী প্রকৌশলী কাইছার আলম বলেন, জেলার ৬৫ স্থানের প্রায় ২৯ কিলোমিটার বাঁধ নদীতে বিলীনের পথে রয়েছে। গত বছর ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে জেলার ২১ কিলোমিটার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অর্থাভাবের কারণে যা সংস্কার করা সম্ভব হয়নি।

তিনি আরও বলেন, জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য জিওব্যাগ, বালু এবং মাটি আমরা প্রস্তুত করে রেখেছি। যদি কোনো এলাকায় বাঁধ ভেঙে লোকালে পানিতে প্রবেশ করে তাহলে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

সাইফুল ইসলাম মিরাজ/এমএসআর