চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর লকডাউনে তৎপর পুলিশ, রাস্তা ফাঁকা
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় মঙ্গলবার (২৫ মে) থেকে চাঁপাইনবাবগঞ্জে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে। সকালে জেলার বিভিন্ন উপজেলা ও রাস্তার মোড়ে মোড়ে পুলিশি তৎপরতায় রাস্তা ফাঁকা দেখা গেছে।
চেকপোস্ট বসানোর পাশাপাশি টহল দিয়ে মানুষকে ঘরে রাখতে পুলিশ কাজ করছে। শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে চেকপোস্ট বসিয়ে প্রবেশ বা চলাচলে বাধা দেওয়া হচ্ছে। জরুরি সেবা ছাড়া ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে সকল যানবহন।
বিজ্ঞাপন
জেলা শহর, নাচোল, শিবগঞ্জ, গোমস্তাপুর ও ভোলাহাট উপজেলার কোথাও তেমন গাড়ির চাপ নেই। কঠোর লকডাউন ঘোষণার পর সোমবার (২৪ মে) বিকেলে ইউনিয়ন পর্যায়ে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হয়। ফলে অন্যান্য লকডাউনের চেয়ে এবার গ্রামের মানুষরাও তুলনামূলক বেশি সচেতন রয়েছে।
সদর উপজেলার গোবরাতলা ইউনিয়ন পরিষদের চাঁপাই-মহেশপুর গ্রামের যুবক আপন রেজা বলেন, এর আগে অনেক লকডাউন দেখেছি, তবে এমন লকডাউন কখনও হয়নি। মাইকিং করার কারণে গ্রামের মানুষের মাঝেও ভয় কাজ করছে। তেমন জরুরি না হলে কেউ বাইরে বের হন না। এছাড়াও গ্রাম পুলিশের সদস্যরা কঠোর লকডাউন নিশ্চিত করতে মোড়ে মোড়ে ঘুরছেন।
জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার কানসাট আম বাজারের ফার্মেসি মালিক আবু তাহের ঢাকা পোস্টকে জানান, কানসাট মোড়ে সব সময় জ্যাম লেগে থাকে। তবে আজকে তেমন কোনো গাড়ি লক্ষ্য করছি না। সচেতনতা বা ভয় যাই হোক না কেন মানুষ ঘরে থাকছে। মাঝে মধ্যে দু-একটা অটো রাস্তায় চলাফেরা করছে, তাও ভয়ে ভয়ে। কানসাট বাজারে পুলিশ ও গ্রাম পুলিশের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে বলেও জানান তিনি।
সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান তরিকুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় মাঠপর্যায়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে কাজ করছে ইউনিয়ন পরিষদ। সে লক্ষ্যে গতকাল (সোমবার) মাইকিং করা হয়েছে। গ্রাম পুলিশের সদস্যরা মোড়ে মোড়ে গিয়ে দোকানপাট বন্ধ রাখতে ও মানুষকে ঘরে যেতে বলছেন।
জেলা শহরের বিশ্বরোড মোড়ের একজন ট্রাফিক সার্জেন্ট বলেন, লকডাউনে রাস্তায় চলাচলকারীদের জিজ্ঞেস করা হয় কোথায় যাবেন, কী কাজ আছে? এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে না পারলে যেতে দেয়া হচ্ছে না। ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে বাড়ি। তবে জরুরি সেবায় সম্পৃক্ত ব্যক্তিরা অবাধে চলাচল করতে পারছেন।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাহবুব আলম খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, যেহেতু দীর্ঘদিন ধরে করোনাকাল অতিবাহিত হচ্ছে তাই জনসাধারণ আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন। জেলা জুড়ে কঠোর লকডাউন বাস্তবায়ন করতে পুলিশের চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। পুলিশ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ বাইরে বের হলে ঘরে ফেরত পাঠাচ্ছে। তবে জরুরি সেবা, পণ্যবাহী যানবহন ও আম পরিবহনের সাথে সংশ্লিষ্ট পরিবহন কঠোর লকডাউনের আওতায় থাকবে না।
জেলা শহরে সাতজন ও উপজেলা পর্যায়ে ছয়জন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কঠোর লকডাউন বাস্তবায়নে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছেন।
জাহাঙ্গীর আলম/আরএআর