দেশের সীমান্তবর্তী চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ। এতে বিপর্যস্ত মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ছিন্নমূল ও অসহায় মানুষের দুর্ভোগ চরমে। তীব্র শীত উপেক্ষা করে কাজের সন্ধানে বের হওয়া খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছে বিপাকে।

শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) সকাল ৯টায় চুয়াডাঙ্গায় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯০ শতাংশ। গত দুই দিন যাবত চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মৃদ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। চলতি মৌসুমে এটিই জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।

এদিকে, তীব্র শীতে প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। ফলে সব থেকে বেশি সমস্যায় পড়েছেন দিন আনা দিন খাওয়া মানুষেরা। শুক্রবার ভোরে এলাকার বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে ও চায়ের দোকানে শীত নিবারণের চেষ্টায় আগুন জ্বালিয়ে উত্তাপ নিতে দেখা গেছে নিম্ন আয়ের মানুষগুলোকে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সূর্যের দেখা মিললেও শৈত্যপ্রবাহের কারণে কমেনি শীতের দাপট। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এ এলাকার মানুষ।

অপরদিকে, চুয়াডাঙ্গা জেলার সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে বেড়েছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। এরমধ্যে বেশিরভাগই রোটাভাইরাস জনির কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে বয়োবৃদ্ধসহ শিশুরা। এ ছাড়া শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে সদর হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ৪০০-৫০০ বয়োবৃদ্ধ-শিশুরা চিকিৎসা নিচ্ছেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরে চান্দু আলী নামে একজন হোটেল ব্যবসায়ী ঢাকা পোস্টকে বলেন, ফজরের আজানের পরই হোটেল খুলতে হয়। সকালে নাশকতায় চাপ থাকে। ভোরে পানিতে হাত পড়লে মনে হচ্ছে অবশ হয়ে যাচ্ছে। তারপরও পেটের দায়ে কাজ করছি।

আকাশ নামের এক চা দোকানি ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভোর থেকেই লোকজনের আনাগোনা থাকে। গত কয়েকদিন যাবত প্রচণ্ড ঠান্ডায় লোকজনের আনাগোনা তেমন নেই। হিমেল বাতাসের কারণে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। এ জন্য দেরিতে দোকান খুলতে হচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান ঢাকা পোস্টকে বলেন, শুক্রবার সকাল ৯টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমের জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। জেলার ওপর দিয়ে মৃদ শৈত্যপ্রবাহ শুরু হয়েছে, যা কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাপমাত্রা আরও কমতে পারে।

আফজালুল হক/এএমকে