মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম
শুধু চাঁদাবাজের চেহারা পরিবর্তন হয়েছে, চাঁদাবাজি পরিবর্তন হয়নি
শুধু চাঁদাবাজের চেহারা পরিবর্তন হয়েছে, চাঁদাবাজি পরিবর্তন হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমির ও শায়েখে চরমোনাই মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম।
তিনি বলেন, একাত্তর থেকে ২০২৪ পর্যন্ত যারাই ক্ষমতায় ছিল, তারা কেউই বৈষম্য দূর করতে পারেনি। না পারার কারণে ২৪ এর ৫ আগস্ট আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করে ফ্যাসিস্টকে তাড়ালাম। কী ভেবে ছিলাম, এবার চাঁদাবাজি দূর হবে, বৈষম্য দূর হবে, অত্যাচার থাকবে না, অবিচার থাকবে না। বাংলার মানুষ স্বাধীনভাবে বসবাস করবে। কিন্তু ৫ আগস্টের পর আমরা কী দেখলাম। আবারো সেই জুলুম, আবারো সেই চাঁদাবাজি, আবার অত্যাচার-অবিচার। শুধু চাঁদাবাজের চেহারা পরিবর্তন হয়েছে, চাঁদাবাজি পরিবর্তন হয়নি। এতদিন চাঁদা নিতো ফেল্টু, এখন চাঁদা নেয় রেন্টু। এতদিন গুন্ডামি করতো কেল্টু, এখন করে নেন্টু। হাতের পরিবর্তন হয়ছে, কিন্তু চাঁদাবাজের পরিবর্তন হয়নি।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বিকেলে রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের হাসনাবাদ তাঁতী বাজারে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের উপজেলা শাখার আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
ফয়জুল করিম বলেন, এ দেশে ব্যক্তির পরিবর্তন হয়েছে, দলের পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু নীতি আদর্শের পরিবর্তন হয়নি। ৫ আগস্ট জীবনের মায়া ত্যাগ করে রাস্তায় ছিলাম আমরা। ফ্যাসিস্টকে এ দেশ থেকে যেতে বাধ্য করেছি আমরা। অথচ ৫ আগস্টের পর চোর, ডাকাতে দেশটা ভরে গেছে। এর জন্য জীবন দেয়নি মানুষ। এর জন্য আন্দোলন করিনি, সংগ্রাম করিনি। এজন্য চাঁদাবাজের বিরুদ্ধে, চোরদের বিরুদ্ধে, ডাকাতদের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। এজন্য ন্যায় ও আদর্শবান ব্যক্তিদেরকে ক্ষমতায় বসাতে হবে। এজন্য শুধু নেতা নয়, নীতির পরিবর্তন চাই।
তিনি আরও বলেন, ৫ আগস্টের পর হিন্দুদের ধর্মীয় উপাসনালয় আমরা পাহারা দিয়েছি। কোনো আলেম চাঁদাবাজি করে না। ইসলাম শান্তির কথা বলে। কোনো মুসল্লি মানুষ চাঁদাবাজি করে না, তারা মদের ব্যবসা করে না, তারা গুন্ডামি করে না, অনিয়ম করে না, দুর্নীতি করে না। তারা মানুষের ন্যায্য অধিকার সৃষ্টি করার চেষ্টা করে। যারা নৌকা নিয়ে নির্বাচন করে তারা নৌকা চালাতে পারে না। যারা ধানের শীষ নিয়ে নির্বাচন করে তাদের অনেকেই ধান কাটতে জানে না। যারা লাঙ্গল নিয়ে নির্বাচন করে তাদের অনেকেই লাঙ্গল চালাতে জানে না, কিন্তু যারা হাতপাখা নিয়ে নির্বাচন করে, তারা হাতপাখা ব্যবহার করতে জানে। এই হাতপাখা ধনী, গরিব, হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান সকলেরই প্রয়োজন পড়ে। কারেন্ট ফেল করলেও হাতপাখা কিন্তু ফেল করে না। এটা সবার প্রতীক, এটা শান্তির প্রতীক, এটা সার্বজনীন প্রতীক, সবার ঘরের প্রতীক। তাই সামনে নির্বাচনে হাতপাখায় ভোট দিয়ে জয়ী করলে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে কাজ করা যাবে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরগঞ্জ ইউনিয়ন শাখার সভাপতি মোহাম্মদ ফজলুল হক মোল্লার সভাপতিত্বে ও ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ নরসিংদী শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সাজেদুল্লাহ সায়েমের সঞ্চালনায় গণসমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য দেন নরসিংদী-৫ (রায়পুরা) আসন থেকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মনোনয়ন প্রত্যাশী কলরব শিল্পী গোষ্ঠীর নির্বাহী পরিচালক হাফেজ মাওলানা বদরুজ্জামান, ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফ বিন মেহের উদ্দীন, নরসিংদী জেলা ইসলামী আন্দোলনের সভাপতি আশরাফ হোসেন ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক মুসা বিন কাসিম প্রমুখ।
তন্ময় সাহা/আরএআর