সোনাগাজীতে রাতের আঁধারে সড়কের বিটুমিন ও গ্রিন অয়েল লুট

ফেনীর সোনাগাজীতে গভীর রাতে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সড়ক পাকাকরণ কাজের বিটুমিন ও গ্রিন অয়েল লুট হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় গতকাল রাত ৯টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের নামে সোনাগাজী মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমকেএম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মাহতাব হোসেন চৌধুরী। 

ভুক্তভোগী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১টার দিকে সোনাগাজী উপজেলার বগাদানা ইউনিয়নের ডেনিস ইছাপুর সড়কের পাশে রাখা বিটুমিন ও গ্রিন অয়েল নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। তারা ১০ ড্রাম বিটুমিন ও ৭ গ্যালন গ্রিন অয়েল, ড্রাম্পে থাকা ২ হাজার ৭৭৫ লিটার লুব্রিকেন্ট একটি বড় ট্রাকে করে লুট করে নিয়ে যায়। 

জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) জিএমপি-৩ প্রকল্পের আওতায় ৮৫ লাখ টাকা বরাদ্দে বগাদানা ইউনিয়নের ডেনিস ইছাপুর ৭০০ মিটার সড়ক পাকাকরণের কাজ পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমকেএম কনস্ট্রাকশন। ইতোমধ্যে সড়কের পিচ ঢালাই ছাড়া মেগাডম (ইটের খোঁয়া), পাথর, বালি দিয়ে সড়ক সংস্কারের প্রাথমিক কাজ শেষ হয়েছে। গত জুন মাসে কাজটি করার কথা থাকলেও পরবর্তী বন্যা ও দেশের পরিবর্তীত পরিস্থিতির কারণে কাজ শেষ করতে অতিরিক্ত সময় পান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান।

এমকেএম কনস্ট্রাকশনের প্রতিনিধি স্থানীয় বাসিন্দা জামাল উদ্দিন বলেন, রাত ১টার দিকে ১০-১২ জন লোক একটি বড় ট্রাক ও মোটরসাইকেল নিয়ে এসে বিটুমিন ও গ্রিন অয়েলের ড্রামগুলো তুলে নিয়ে যায়। তাদের একটি মোটরসাইকেলের পেছনে ইসলামি ব্যাংকের স্টিকার লাগানো ছিল। বুধবার সকালে আবার কাজ শুরু করলেও বিকেলে একদল লোক এসে সড়কের কাজ বন্ধ করে দেন। তবে তিনি কারো নাম বলতে রাজি হননি।

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এমকেএম কনস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী মাহতাব হোসেন চৌধুরী বলেন, বৃষ্টি ও বন্যার জন্য নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা যায়নি। এখন সড়কের চলমান কাজে ব্যবহারের জন্য বিটুমিন ও গ্রিন অয়েল আনা হয়েছিল। দুর্বৃত্তরা রাতের আঁধারে ৩ লাখ টাকার বিটুমিনসহ গ্রিন অয়েল লুট করে নিয়ে গেছে। এ বিষয়ে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। মালামাল উদ্ধার ও দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে প্রশাসনের কাছে জোর দাবি করছি। 

এদিকে স্থানীয় একটি সূত্রে জানা যায়, রাতে লুটের ঘটনার পরেও বুধবার সড়কের কাজ চলমান ছিল। বিকেল ৪টার দিকে স্থায়ীয় বিএনপির একটি পক্ষের লোকজন এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। ইতোপূর্বেও বিএনপির সেই পক্ষের সঙ্গে আর্থিক সমঝোতার মাধ্যমে কাজ চলমান ছিল বলে দাবি করেন তারা।

তবে এ বিষয়ে জানতে চাইলে স্থানীয় বিএনপির দায়িত্বশীল কোনো নেতা মন্তব্য করতে রাজি হননি। 

এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বায়েজীদ আকন্দ বলেন, এ ঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

তারেক চৌধুরী/এনএফ