ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে কড়ইতলী ও গোবরাকুড়া স্থলবন্দর দিয়ে গত ১৭ দিন যাবত ভারতীয় কয়লা আমদানি বন্ধ রয়েছে। এতে শ্রমিকদের মধ্যে কর্ম সংকট সৃষ্টি হয়েছে।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিকেলে কড়ইতলী-গোবরাকুড়া আমদানি-রপ্তানি গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার অপু এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, ভারত থেকে প্রতি টন কয়লা কেনাসহ সব মিলিয়ে খরচ হচ্ছে ১৮ হাজার টাকা। আমরা ৫০০ টাকা লাভ করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছি। ক্রেতা ধরে রাখাসহ বন্দর দুটির কার্যক্রম সচল রাখতে আমরা লাভ কম করছি। তবুও গত ২২ ডিসেম্বরের পর থেকে বড়দিন ও নতুন বছর শুরু হওয়ায় কয়লা রপ্তানি বন্ধ রাখার কথা বলে এখন পর্যন্ত রপ্তানি বন্ধ রেখেছে ভারতীয়রা। এতে ঝিমিয়ে চলছে বন্দরের কার্যক্রম।

তিনি আরও বলেন, বর্তমান সময়ে ইটভাটায় প্রচুর কয়লা প্রয়োজন। মালিকরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে কয়লা নিচ্ছেন। এ সময় বন্দরের কার্যক্রম বন্ধ থাকলে মালিক-শ্রমিক সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই আমরা রপ্তানিকারকদের সঙ্গে কথা বলছি। আশা করছি কয়েকদিনের মধ্যেই আমদানি-রপ্তানি শুরু হবে।

এ সময় তিনি ভারতীয় কয়লার দাম কমানো দরকার উল্লেখ করে বলেন, দাম কিছুটা কমালে সারাবছর ব্যবসা চাঙা থাকবে। প্রচুর কয়লা আমদানি করা যাবে। এতে ক্রেতারা কম দামে কিনতে পারবে।

স্থলবন্দর সূত্র জানায়, গত বছরের এপ্রিলে ভারত থেকে মাত্র ৯৬৪ টন কয়লা আমদানি হয়। এরপর আমদানি পুরোপুরি বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা। ৪ ডিসেম্বর দুই স্থলবন্দর দিয়ে ৮ ট্রাকে ৯৬ টন কয়লা বাংলাদেশে প্রবেশের মধ্য দিয়ে আবারও কার্যক্রম শুরু হয়। সেসময় থেকে ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত ৯০ ট্রাক কয়লা বাংলাদেশে আসে। এসব ট্রাকে ১ হাজার ৮০ টন কয়লা ছিল। এরপর বড়দিন ও নতুন বছরে কয়েকদিন ছুটির কথা বলে রপ্তানি বন্ধ রাখে ভারতীয়রা।

কড়ইতলী-গোবরাকুড়া বন্দরের সহকারী পরিচালক পার্থ ঘোষ বলেন, ইন্দোনেশিয়ার কয়লা জাহাজে করে বাংলাদেশে আসে। এগুলোর গুণগত মান ভারতীয় কয়লার চেয়ে কিছুটা কম। এজন্য কয়েক হাজার টাকা কম দামে বিক্রি করা হয়। কিন্তু ভারতীয়রা দাম কমাতে নারাজ। ফলে তাদের কয়লা আমদানি কম হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, সারাবছর আমদানি-রপ্তানি ঠিক থাকলে স্থলবন্দরের কার্যক্রম জমজমাট থাকবে। এতে ভারতীয় রপ্তানিকারকদের লাভবান হওয়ার পাশাপাশি বাংলাদেশি আমদানিকারকরাও বেশি পরিমাণ কয়লা আমদানি করতে পারবে। ফলে শ্রমিকদেরও বেকার থাকতে হবে না। ভারতীয়রা ইচ্ছা করলেই সহনীয় দামে কয়লা বিক্রি করতে পারে।

এ বিষয়ে হালুয়াঘাট স্থলবন্দরের রাজস্ব কর্মকর্তা তমাল কান্তি বলেন, গত অর্থবছরে কয়লা আমদানি খুব কম হয়েছে। তবুও ২০ লাখ টাকার মতো রাজস্ব আদায় হয়েছে। সারাবছর আমদানি-রপ্তানি চাঙা থাকলে রাজস্ব আদায় বাড়বে।

এআইএস