নাটোরের সিংড়া উপজেলার পাঁচবাড়িয়া খালে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাদের ইটভাটার অবৈধ সাতটি বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। ফলে বিলের প্রায় ৫০০ একর কৃষি জমির এক যুগের জলাবদ্ধার নিরসন ঘটবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন এলাকার ভুক্তভোগী কৃষকেরা ।

বুধবার (২৫ ডিসেম্বর) নাটোর-বগুড়া মহাসড়কের পাঁচবাড়িয়া বিল এলাকায় সিংড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ভেকু দিয়ে খালের অবৈধ বাঁধগুলো অপসারণ করা হয়। এছাড়া ওই খালের বাকি বাঁধগুলো অপসারণে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন ইউএনও।

স্থানীয় ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের পাঁচবাড়িয়া এলাকায় সড়ক ও জনপদ বিভাগের খালে সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী পলকের সহযোগী ও অত্যন্ত ঘনিষ্ঠজন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিংড়া পৌরসভার সাবেক মেয়র জান্নাতুল ফেরদৌসসহ তিনজন ইটভাটার মালিক বাঁধ দিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।

ফলে বর্ষা মৌসুম শেষ হলেও শেরকোল পাঁচবাড়িয়া, আগপাড়া, খাগোরবাড়িয়া, মাদারীগ্রাম, নিওগিরগ্রামের প্রায় ৫০০ একর ফসলী জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে থাকতো। দীর্ঘ দিন ধরে শতাধিক কৃষকের রবিশস্য ও বোরো ধান চাষাবাদ বিঘ্নিত হচ্ছিল।

স্থানীয় পরিবেশকর্মী সাইফুল ইসলাম বলেন, চলনবিলে অসংখ্য সরকারি খাল ও জলাশয় রয়েছে। খাল দখলে বিলের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়ছে। তাছাড়া রবিশস্য মৌসুমে কৃষকের পানি নিষ্কাশন বাঁধাগ্রস্ত এবং ফসলি জমিতে প্রয়োজনের সময় কৃষকেরা সেচ সুবিধা বঞ্চিত হয়। চলনবিলের কৃষি ও কৃষকের স্বার্থে গণসচেতনতা ও আইন প্রয়োগ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাজহারুল ইসলাম বলেন, খালের মাঝে ইটভাটার মালিকদের অবৈধ বাঁধে পানির স্বাভাবিক চলাচল বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছিল। এতে শেরকোল ইউনিয়নের বিভিন্ন বিলের কৃষি জমিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে অনেক জমি পতিত থাকতো। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে বাঁধগুলো অপসারণ করা হচ্ছে। সবাইকে সর্তক করা হয়েছে। এরপরও যদি কেউ প্রাকৃতিক খাল ও জলাশয়ের পানির প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত করে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে বলেও জানান প্রশাসনের এই কর্মকর্তা।

গোলাম রাব্বানী/আরকে