সৌদি আরবের মদিনা শহরে দুর্ঘটনায় ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের তিন যুবক নিহত হয়েছেন। তাদের মৃত্যুর খবরে নিজ নিজ বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। মরদেহের অপেক্ষায় রয়েছেন স্বজনরা। গত শনিবার (২১ ডিসেম্বর) মদিনা শহরে পৃথক এ দুর্ঘটনা ঘটে। 

নিহতরা হলেন- উপজেলার নিগুয়ারি ইউনিয়নের কুরচাই গ্রামের নাম আবু সাঈদের ছেলে ইকরাম হোসেন (২৫), লংগাইর ইউনিয়নের পূর্ব গোলাবাড়ি গ্রামের মো.খোকা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ রিফাত মিয়া (২১) ও  উপজেলার পাইথল গ্রামের বদর উদ্দিন ওরফে তোতা মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া(৩৮)। 

নিহত ইকরামের বাবা আবু সাঈদ জানান, এক বছর আগে ২০২৩ সালের ২২ ডিসেম্বর ইকরাম সৌদি আরবে যান। কোম্পানিতে রাস্তায় ক্লিনার হিসেবে কাজ করতেন ইকরাম। শনিবার সকালে কাজ শেষে ৫-৬ জন বাসায় ফিরছিলেন। ফেরার পথে পেছন থেকে অন্য একটি গাড়ি তাদের ধাক্কা দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই  ইকরামসহ ৪ বাংলাদেশি নিহত হন। তাদের মধ্যে একজন ইকরাম। অন্যজন গফরগাঁওয়ের পূর্ব গোলাবাড়ী গ্রামের রিফাত মিয়া। দাম্পত্য জীবনে ইকরাম এক ছেলে সন্তানের জনক।

নিহত রিফাতের বাবা মো. খোকা মিয়া বলেন, ধারদেনা করে এক বছর আগে ছেলেকে সৌদি আরবে পাঠিয়েছি। এখনো মাথার ওপর ঋণের বোঝা। সংসারের অভাব ঘোছাতে অল্প বয়সী ছেলেকে বয়স বাড়িয়ে সৌদি পাঠিয়েছিলাম।

এদিকে একই দিনে সৌদি আরবের মদিনা শহরে মটর ওয়ার্কসপে কাজ করার সময় টায়ার বিস্ফোরণে সুমন মিয়া (৩৮) নামে এক বাংলাদেশি যুবক নিহত হয়েছেন। তিনি উপজেলার পাইথল ইউনিয়নের পাইথল গ্রামের মো. বদর উদ্দিন ওরফে তোতা মিয়ার ছেলে। মদিনা শহরের মটর ওয়ার্কসপ কোম্পানিতে শ্রমিকের কাজ করতেন তিনি। 

নিহত সুমনের চাচা আব্দুল হক জানান, প্রায় ১১ বছর আগে চাকরি নিয়ে সৌদি আরবে যান সুমন। সেখানে মদিনা শহরের মটর ওয়ার্কসপ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। দুই বছর আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। ৪-৫ মাস পর ছুটিতে বাড়ি আসার কথা ছিল সুমনের। এখন সারা জীবনের ছুটি নিয়ে লাশ হয়ে বাড়িতে আসছেন। দাম্পত্য জীবনে দুই সন্তানের জনক সুমন। 

তাদের মরদেহ দ্রুত বাংলাদেশে আনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা। 

আমান উল্লাহ আকন্দ/আরএআর