চাঁদপুরের হরিণা ফেরিঘাটের পশ্চিমে মেঘনা নদীর পাড়ে মাঝিরচর এলাকায় নোঙর করা এমভি আল-বাখেরা নামের জাহাজে ৭ জনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতদের মধ্যে দুইজনের বাড়ি মাগুরার মহম্মদপুরে। 

একজন উপজেলার চর যশোবন্তপুর গ্রামের আনিচ মোল্লার ছেলে মো. মাজেদুল ইসলাম (১৫) ও অপরজন নিহত ব্যক্তি পলাশবাড়িয়া ইউনিয়নের পলাশবাড়িয়া গ্রামের দাউদ মুন্সির ছেলে সাজিবুল মুন্সী (২২)। 

পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মহম্মদপুর উপজেলার ঝামা বরকতুল উলুম ফাজিল মাদরাসা থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা শেষ করে কয়দিনের জন্য চাকরিতে গিয়েছিলেন মো. মাজেদুল ইসলাম। ১২ দিন আগে চাকরি নিয়েছিলেন এম ভি আল-বাখেরা নামের জাহাজের লস্কর পদে। কিছুদিন চাকরি করে বাড়ি ফিরে দশম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার কথা ছিল তার। এরই মধ্যে বাড়িতে এলো তার মরদেহ।

একই উপজেলার পলাশবাড়িয়া গ্রামের অপর নিহত ব্যক্তি দাউদ মুন্সীর ছেলে সাজিবুল মুন্সী। তিনি একই জাহাজের গ্রিজার পদে কর্মরত ছিলেন। ১৬ দিন আগে বাড়ি থেকে ঘুরে গিয়েছিলেন। স্ত্রীকে বলে গিয়েছিলেন, চিন্তা করো না দ্রুতই বাড়িতে ফিরব। ফিরেছেন তবে, জীবিত নয় লাশ হয়ে। মহম্মদপুরে এই দুই বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।

নিহতের প্রতিবেশী চাচা রাজিব মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, মাজেদুলের বাবা ঢাকাতে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। পরিশ্রমী মাজেদুল মাদরাসা থেকে নবম শ্রেণির পরীক্ষা দিয়ে দশম শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার কথা। ছুটির কয় দিনে পরিবারে একটু সচ্ছলতা আনতে ও অনেকটা শখের বসে জাহাজে চাকরি নিয়ে বাড়ি থেকে যান ১২ দিন আগে। তিন ভাই এক বোনের মধ্যে মাজেদুল ভাইদের মধ্যে ছোট। সোমবার বিকেলে মাজেদুলের মৃত্যুর খবর জানতে পারি। তার মৃত্যুর খবর শুনে পরিবারের সদস্যরা ভেঙে পড়েছেন।

অপর নিহত সাজিবুল মুন্সির চাচাতো ভাই জাকির সাংবাদিকদের বলেন, জাহাজে গ্রিজার পদে চাকরিরত ছিল সজিবুল। তিন ভাইয়ের মধ্যে সাজিবুল মেজ। ৭ মাস আগে বিয়ে করেছেন। ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসে ১৫-১৬ দিন আগে কর্মস্থলে ফিরে যান তিনি। সোমবার বিকাল ৩টার দিকে জানতে পারি জাহাজটিতে হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এরপর খবর পায় হাসপাতালে যাওয়ার পর সাজিবুল মারা গেছে। 

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান বলেন, জাহাজে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মহম্মদপুর উপজেলার দুজনের মৃত্যুর খবরটি জানতে পেরেছি। তাদের পরিবারের সদস্যরা ইতোমধ্যে মরদেহ  আনার জন্য সেখানে গিয়েছে। এখনো অফিসিয়ালি কোনো কাগজপত্র পাইনি তবে পুলিশের পক্ষ থেকে নিহতদের পরিবার ও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে।

তাছিন জামান/আরকে