সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন ধরে হাসপাতালের সার্জারি, মেডিসিন, গাইনী, অর্থপেডিক্স ও চক্ষুসহ চিকিৎসকদের ১০টি পদ শূন্য রয়েছে।

মাত্র ১২ জন চিকিৎসক দিয়ে চলছে ১০০ শয্যার এ হাসপাতাল, যেখানে প্রতিদিন ভর্তি রোগী থাকে প্রায় ২০০ জন এবং বহির্বিভাগে স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন আরও ২০০-৪০০ রোগী।

এদিকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাবে জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে আসা রোগীরা কাঙ্ক্ষিত সেবা না পেয়ে ফিরে যাচ্ছেন। জরুরি অপারেশন বন্ধ থাকায় রোগীরা বাধ্য হয়ে বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালে যাচ্ছেন, যেখানে তাদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া হাসপাতালে সিনিয়র কনসালটেন্ট না থাকায় সাধারণ মেডিকেল অফিসার দিয়েই রোগীদের চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। এছাড়া নার্স ও মেডিকেল টেকনোলজিস্টসহ বিভিন্ন পদ শূন্য থাকায় সেবার মান আরও তলানিতে পৌঁছেছে।

আশাশুনি উপজেলার আব্দুর রশিদ গাজী ও কাছেদ আলী মোড়ল জানান, দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে সদর হাসপাতালে এসে জানতে পারেন এখানে কোনও হাড় বা চক্ষু বিশেষজ্ঞ নেই। অর্থনৈতিক সংকটের কারণে তারা বেসরকারি ক্লিনিকেও যেতে পারেননি।

ধুলিহর গ্রামের মোকলেছুর রহমান জানান, তার বৃদ্ধ বাবার জন্য মেডিসিনের ডাক্তার দেখাতে গিয়ে জানতে পারেন এ হাসপাতালে কোনও মেডিসিন বিশেষজ্ঞ নেই। ফলে বাধ্য হয়েই তাকে ফিরে যেতে হয়।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুস সালাম জানান, চিকিৎসকসহ অন্যান্য জনবল সংকটের বিষয়টি একাধিকবার স্বাস্থ্য বিভাগের মহাপরিচালকের দপ্তরে জানানো হলেও এখনও কোনও সমাধান হয়নি। তবে সাধ্যমতো রোগীদের সেবা দিতে চেষ্টা করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের এ অব্যবস্থাপনার কারণে সাধারণ মানুষের চিকিৎসা সেবা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া না হলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ইব্রাহিম খলিল/টিএম