জঙ্গি সন্দেহে গ্রেপ্তারের পর ১৭ বছর ধরে কারাগারে রয়েছেন মুরাদ হোসেন নামে খুলনার এক যুবক। এর মধ্যে ঝালকাঠি আদালতের পিপি হায়দার হোসেন হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসির আদেশও দিয়েছেন আদালত।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে মুরাদের পরিবার এই দাবি করেছে।

পারিবারিক সম্পদ ভাগ বাটোয়ারা ও রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে ২০০৭ সালে বাড়ি থেকে মুরাদ হোসেনকে তুলে নিয়ে যায় র‌্যাব। প্রথমে জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা দেওয়া হয়।

পরে মুরাদকে ঝালকাঠি আদালতের পিপি হায়দার হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় রিমান্ডে নিয়ে পিটিয়ে তার কাছ থেকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি আদায় করা হয়। সেই জবানবন্দির আলোকে আদালত মুরাদকে ফাঁসির আদেশ দেন। অন্য দুটি মামলায় মুরাদ খালাস পেয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে মুরাদের ছোট ভাই মো. নয়ন বলেন, গ্রেপ্তারের সময় মুরাদ হোসেন সরকারি মজিদ মেমোরিয়াল সিটি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিল। ওই সময় জেএমবি বা জঙ্গি শব্দটিই ছিল আতঙ্কের নাম। তখন মুরাদের পক্ষে কোনও আইনজীবী দাঁড়াননি। জবানবন্দি প্রত্যাহারের আবেদনও গ্রহণ করা হয়নি। একইসঙ্গে তার বাবাকে চাপ দিয়ে মুরাদকে ত্যাজ্যপুত্র ঘোষণা করানো হয়।

নয়ন দাবি করেন, ওই মামলায় ৫ জনের ফাঁসি হয়েছে। এর মধ্যে ৩ জনই পলাতক। অন্য যাদের ফাঁসি হয়েছে তারাও মুরাদকে চিনতেন না। কারাগারে দেখা করতে গেলে মুরাদ বলতো, জঙ্গি মামলায় জেএমবির যত নেতা কারাগারে আসতো, মামলায় হাজিরা দিতে যেতো কেউই মুরাদকে চিনতো না। সবাই মুরাদকে দেখে আফসোস করতো।

তিনি বলেন, জঙ্গি মামলায় ভাইয়ের ফাঁসির সংবাদে তারা সামাজিকভাবে অনেক নিগ্রহের স্বীকার হয়েছেন। মুরাদের সঙ্গে দেখা করতে গেলেও হয়রানির শিকার হতে হতো। এসব কষ্ট নিয়ে ২০১৯ সালে বাবা মারা যান। এর বিরুদ্ধে কথা বলার কোনও পরিবেশ ছিল না।

সংবাদ সম্মেলনে নয়ন ঝালকাঠি আদালতের পিপি হায়দার হোসেন হত্যা মামলার পুনঃতদন্ত দাবি করেন। একইসঙ্গে প্রকৃত খুনীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং তার ভাইকে মুক্তি দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

মোহাম্মদ মিলন/টিএম