অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নির্বাচনের জন্য জামায়াতে ইসলামী যৌক্তিক সময় দিতে চায় বলে জানিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের পরিচালক মোবারক হোসাইন। রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলে গাংনী হাইস্কুল ফুটবল মাঠে উপজেলা জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা জানান। 

মোবারক হোসাইন বলেন, বর্তমান সরকারকে টিকে রাখার জন্য দলমত নির্বিশেষে এই সরকারকে বসানো হয়েছিল। এই সরকারকে ফেলে দেওয়ার জন্য বহির্বিশ্বে গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে। এই ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে আমাদেরকেই সজাগ থাকতে হবে। বাংলাদেশকে বেকায়দায় ফেলার জন্য পতিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসররা বিভিন্ন সময় ভিন্ন ভিন্ন রূপধারণ করে আন্দোলনে আসতে চাচ্ছে। কোনো সময় আনসার লীগ, রিকশা লীগ, গার্মেন্টস শ্রমিক লীগ, ইস্কন লীগ সেজে মাঠে নামছে তারা। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আমরা বলবো আপনার গোয়েন্দা সংস্থার লোক লাগিয়ে খোঁজ-খবর রাখেন এরা যেন আর মাথা চাড়া দিতে না পারে। 

নির্বাচন প্রসঙ্গে মোবারক হোসাইন বলেন, আগামী নির্বাচন হবে ফ্রি-ফেয়ার অংশগ্রহণমূলক। সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। যে নির্বাচনে দেশের সকল রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করতে পারবে এবং প্রত্যেকটা ভোটার নির্ভয়ে ভোট দিতে পারবেন। এই নির্বাচনের আয়োজন করতে পারবে বর্তমানের নবনির্বাচিত নির্বাচন কমিশন। এই আশা আমাদের আছে।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে বসে বাংলাদেশের বিষয়ে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন। এ ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষকে বাড়তি সতর্ক থাকতে হবে। কারণ আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে কিনা সে ব্যাপারে বাংলাদেশের মানুষ সিদ্ধান্ত নেবে।  আওয়ামী লীগ এই দেশটাকে একক পরিবারের হাতে জিম্মি করে রেখেছিল। আওয়ামী লীগ সরকার লুটপাট করে দেশটাকে ফাঁকা করে দিয়েছে, ব্যাংকে কোনো টাকা নেই। দেশের মানুষ অনেক কষ্টে রয়েছে। প্রত্যেকটা জিনিসের দামে ঊর্ধ্বগতি। বাজার করতে গেলে সাধারণ মানুষ হিমশিম খাচ্ছে, একটাই কারণ দেশের অর্থনীতিকে পঙ্গু করে ফেলে গেছে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার।

তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকার মনে করেছিল জামায়াতকে বাংলার মাটি থেকে নিঃশেষ  করে দেবে, কিন্তু পারেনি। কারণ দেশের মানুষ জামায়াতের সঙ্গে আছে। জামায়াতের প্রথম সারির নেতাদেরকে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। পৃথিবীতে যার কোনো নজির নেই। এই ধরনের বিচার মেনে নেওয়া যায় না।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন গাংনী উপজেলা জামায়াতের আমির ডা. মোহাম্মদ রবিউল ইসলাম এবং সঞ্চালনায় ছিলেন গাংনী উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম ও পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি ওয়াস কুরুনী জামিল।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জামায়াতে ইসলামীর যশোর-কুষ্টিয়া অঞ্চলের টিম সদস্য ড. আলমগীর বিশ্বাস, মেহেরপুর জেলা আমির মাওলানা তাজ উদ্দীন খান, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুব উল আলম, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির জারজিস হুসাইন, জেলা জামায়াতের রাজনৈতিক সেক্রেটারি মাওলানা রুহুল আমিন, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হুসাইন, মেহেরপুর পৌর জামায়াতের আমির সোহেল রানা ডলার প্রমুখ।

আকতারুজ্জামান/আরএআর