যাত্রী নিয়ে মাঝ নদীতে সংঘর্ষ, দুমড়ে মুচড়ে গেল দুই লঞ্চ
ঘন কুয়াশার কারণে মেঘনা নদীতে যাত্রীবাহী দুটি লঞ্চের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। এতে যাত্রী হতাহত না হলেও দুটি লঞ্চই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শনিবার (২১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত সোয়া ৩টার দিকে চাঁদপুরের হরিণা নামক স্থান সংলগ্ন মেঘনা নদীতে এই দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চ দুটি হলো এমভি কীর্তনখোলা-১০ ও প্রিন্স আওলাদ-১০।
বিজ্ঞাপন
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা ও বিআইডব্লিউটিএর উপ-পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, গতকাল রাত ৯টার দিকে বরিশাল থেকে প্রিন্স আওলাদ-১০ এবং ঢাকা থেকে কীর্তনখোলা-১০ পৃথকভাবে প্রায় এক হাজারের বেশি যাত্রী নিয়ে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যান। অপরদিকে, ঢাকা থেকে প্রিন্স আওলাদ ১০ নামের লঞ্চ বরিশালের নদীপথে রওনা হয়। পথে মেঘনা নদীর চাঁদপুরের হরিণা নামকস্থানে লঞ্চ দুটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।
আরও পড়ুন
দুর্ঘটনাকবলিত লঞ্চের স্টাফরা জানান, ঘন কুয়াশার কারণে দুটি লঞ্চ মুখোমুখি চলে আসলেও দেখা যাচ্ছিল না। যখন দেখা গেছে তখন নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়নি। দুর্ঘটনায় কীর্তনখোলা ১০ লঞ্চের সামনের অংশ দুমড়ে মুছড়ে যায়। একইভাবে প্রিন্স আওলাদা-১০ লঞ্চটিরও সামনের অংশ ভেঙে যায়। রাতে কীর্তনখোলা-১০ লঞ্চটি যাত্রী নিয়ে ঢাকায় যেতে পারলেও দুর্ঘটনার নিকটবর্তী তীরে নোঙর করে প্রিন্স আওলাদ। সকালে এমভি শুভরাজ লঞ্চে করে প্রিন্স আওলাদ লঞ্চের যাত্রী বরিশালে আনা হচ্ছে। দুপুর ১টার পরে আওলাদের যাত্রী শুভরাজে করে বরিশাল বন্দরে আসবে।
কীর্তনখোলা লঞ্চের যাত্রী মেহেদী হাসান মোবাইল ফোনে বলেন, আমরা ঘুমিয়ে ছিলাম। হঠাৎ প্রচণ্ড ঝাকুনি দিয়ে আমাদের লঞ্চটি প্রায় কাত হয়ে যাচ্ছিল। লঞ্চের মধ্যে মুহূর্তে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তখনো বুঝিনি কি ঘটেছে। সামনে ছুটে গিয়ে দেখি আওলাদ লঞ্চের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়েছে।
তিনি বলেন, লঞ্চ দুটির মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে। যাত্রীরা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন। দুটি লঞ্চই এমনভাবে কাত হয়ে গিয়েছিল আরেকটু হলে ডুবে যেত।
প্রিন্স আওলাদ লঞ্চের আরেক যাত্রী ফারজানা বলেন, আমরা ডেকের সামনের দিকে শুয়েছিলাম। রাত আড়াইটা-তিনটার দিকে প্রচণ্ড শব্দে আমাদের লঞ্চটি কেঁপে ওঠে। আমরা সবাই চিৎকার করে উঠি। খুব বাজে অভিজ্ঞতার পর বেঁচে ফিরেছি। এখন শুভরাজ লঞ্চে আছি বরিশালের পথে।
উল্লেখ্য, এমভি কীর্তনখোলা-১০ ও এমভি প্রিন্স আওলাদ-১০ লঞ্চ দুটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন বিলাসবহুল লঞ্চ।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরকে