দোকানদারের দেওয়া ওষুধ জমিতে প্রয়োগ করার ফলে ১২ শতক জমির ফুলকপিতে পচন ধরে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েছেন বর্গাচাষি মো. সাত্তার মিয়া। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার দাবি ভুল ওষুধ প্রয়োগেই নষ্ট হয়েছে ফুলকপি।

খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা পৌর এলাকার পুরাতন বাজার এলাকার কৃষক সাত্তার মিয়া লিজ নিয়ে ১২ শতক জমিতে ফুলকপির চাষ করেছেন। গাছে ফুলকপিও এসেছে। ফুলকপি বড় করার জন্য দোকানদার থেকে বোরণ সার কিনতে গেলে দোকানদার সঙ্গে একটি ভিটামিন ট্যাবলেট দেন জমিতে প্রয়োগের জন্য। সেটি প্রয়োগের তিন-চার দিনের মধ্যে জমির ফুলকপিতে পচন ধরতে থাকে। পরবর্তীতে দোকানদারকে জানালে পচনরোধে আবারও ওষুধ দেন। কিন্তু আর পচন আর রোধ হয়নি। এতে সর্বস্বান্ত কৃষক ছাত্তার মিয়া।

দূর থেকে দেখলে মনে হয় না নষ্ট হয়ে গেছে জমির ফুলকপি। বাতাসে দুলছে তরতাজা গাছগুলো। কাছে গিয়ে দেখা যায় প্রতিটি গাছে রয়েছে ফুলকপি। তবে গাছের সবগুলো ফুলকপিই নষ্ট।

জানা যায়, দোকানদার ওই কৃষকে যে ওষুধটি দিয়েছিলেন, সেটির নাম গ্রিন লিফ (জিব্রেলিক অ্যাসিড গ্রুপের)। এই ওষুধটি লেবুজাতীয় ফসলে প্রয়োগ করা হয়।

কৃষক সাত্তার মিয়া বলেন, তার জমিতে ১৩০০ ফুলকপির গাছ রয়েছে। জমি লিজ নেওয়াসহ এ পর্যন্ত ৩৫-৩৬ হাজার টাকা খরচ করেছেন তিনি। ধারদেনা করে চাষাবাদ করছেন। ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছেন তিনি। মাটিরাঙ্গা বাজারের দুলাল মিয়ার দোকান থেকে বোরন আনতে গিয়েছিলেন। দোকানদার তাকে বোরণের সঙ্গে একটি ভিটামিন ট্যাবলেট দেন। যা প্রয়োগের পরেই ফুলকপি ক্ষেতে পচন ধরে।

তার পার্শ্ববর্তী কৃষক আলতাফ হোসেন বলেন, এতো কষ্টের বিনিময়ে ফসল করার পরে সামন্য একটা ওষুধের কারণে ফসলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এমনিতেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, তারপর দোকানদার পচনরোধ করার জন্য ওষুধ দিয়ে আরও টাকা নষ্ট করেছেন।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের তথ্যমতে ১৩০০ গাছে অন্তত দেড় টনের মতো ফুলকপি হতো। যার আনুমানিক মূল্য ৭০-৮০ হাজার টাকা।

ওই এলাকার দায়িত্বরত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা দেবাশীষ চাকমা জানান, কৃষক সাত্তার মিয়া ফুলকপিতে পচন ধরার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। মূলত দোকানদার ভুল ওষুধ প্রয়োগ করানোর ফলে ফুলকপিগুলো পচে গেছে। ট্যাবলেট ‘জিব্রেলিক অ্যাসিড’ লেবু জাতীয় ফসলে প্রয়োগ করা হয়। ফুলকপিতে দেওয়ায় ফুলকপি পচে গেছে।

মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মনজুর আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক থেকে বিস্তারিত জেনে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মোহাম্মদ শাহজাহান/এএমকে