টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের দাবিতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মহাসড়কের কুমিল্লার আলেখারচর অংশে এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে জেলা ওলামা মশায়েখ ও সর্বস্তরের তৌহিদি জনতা। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া সবাই জোবায়েরপন্থি বলে জানা গেছে।

বিক্ষোভে তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীদের স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়। এ সময় প্রায় আধঘণ্টা ধরে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন বিক্ষোভকারীরা। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদানের মধ্য দিয়ে বিক্ষোভ কর্মসূচি শেষ করা হয়।

স্থানীয় লোকজন জানান,  ইজতেমা মাঠে হামলা চালিয়ে চারজনকে হত্যার প্রতিবাদে মহাসড়ক অবরোধ করেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় অনেকে মহাসড়কে বসে পড়েন। প্রায় আধাঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধের কারণে অন্তত পাঁচ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে জেলা পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরে বেলা ১২টার দিকে পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা অবরোধকারীদের সরিয়ে দিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। পরে সাত দফা দাবি জানিয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

এর আগে সকাল ৯টা থেকে আলেখারচর এলাকায় বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন করা হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন মুফতি শামছুল ইসলাম জিলানী, মাওলানা মফিজুল ইসলাম, মুফতি আমজাদ হোসাইন, মাওলানা আনিসুর রহমান আশরাফী, জসিম উদ্দিন, মাওলানা আহসানুল্লাহ প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, রাতের অন্ধকারে সাদপন্থিদের যারা নিরীহ তাবলিগ জামাতের সাথিদের ওপর হামলা চালিয়ে হত্যা করেছে, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও ফাঁসি নিশ্চিত করতে হবে। এ ছাড়া কুমিল্লা জেলার সব মসজিদে সাদপন্থিদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। যে ধারায় সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে, তেমনি তাদেরও স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, বিক্ষোভকারীরা সকাল ৯টা থেকে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন শুরু করেন। পরে মহাসড়ক অবরোধ করলে তাদের ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে সরিয়ে দেওয়া হয়। পরে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে চলে গেছেন তারা।

প্রসঙ্গত, তাবলিগ জামাতের ইজতেমা ও দাওয়াতি কার্যক্রম নিয়ে ভারতের মাওলানা সাদ কান্ধলভী ও ঢাকার কাকরাইলের মাওলানা জোবায়েরপন্থিদের বিরোধ চলে আসছে। এর জেরে গত বুধবার ভোররাতে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সাদপন্থিদের হামলায় জোবায়েরপন্থি চারজন মুসল্লি নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

আরিফ আজগর/এএমকে