সিলেট নগরীতে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে স্বামী-স্ত্রীর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তাদের মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যার ঘটনা বলে দাবি করছে পরিবার।

বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে সিলেট নগরীর চালিবন্দরস্থ বাসা থেকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসার পথে স্বামী-স্ত্রী দুইজনের মৃত্যু হয়।

নিহতরা হলেন—সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার রুবেল আহমদ (৩০) ও রাজনা বেগম (২৫) দম্পতি।

বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) এডিসি মিডিয়া মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার সকালে রাজনা বেগম বিষপান করে মারা যান। পরে স্বামী রুবেল মিয়া বাসায় গিয়ে স্ত্রীর মৃত্যু দেখে তিনিও বিষপান করলে অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের দুইজনকে উদ্ধার করে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানাধীন সুবহানীঘাট ফাঁড়ি পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করেছে।

নিহত রাজনা বেগমের বাবা আব্দুল মজিদ দাবি করেন, তার মেয়ে সুস্থ ছিলেন। তিন-চার দিন আগেও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে তার ফোনে কথা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর মধ্যেও কোনো বিরোধ ছিল না।পারিবারিক কোনো বিরোধে স্বামী-স্ত্রী দুইজনকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়ে থাকতে পারে।

এদিকে রুবেল আহমদের মা জানান, কয়েকদিন ধরে রাজনা জ্বরে ভুগছিলেন। সকালে কাজ করা অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশাযোগে তাকে নিয়ে ওসমানী হাসপাতালের উদ্দেশে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে রাজনা জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ও মুখ দিয়ে ফেনা বের হতে থাকে। এ সময় স্বামী রুবেল আহমদ কান্নাকাটি শুরু করেন। একপর্যায়ে রুবেলও অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে আসার পর চিকিৎসক দুইজনকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ব্যাপারে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের এডিসি মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, বুধবার সকালে স্ত্রী রাজনা বেগম মারা যান ও হাসপাতালে নেওয়ার পর স্বামী রুবেল মিয়া মারা যান। তবে কী কারণে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। কারণ তাদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন বা আত্মহত্যা করেছেন বলে কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। রুবেল আহমদ নিজেকে রুমেলা হিজড়া নামে পরিচয় দিয়ে থাকতো। প্রকৃতপক্ষে তিনি একজন পুরুষ লোক ও তাদের দুটি সন্তান রয়েছে। মরদেহ সিলেট এমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। ময়নাতদন্তে শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

মাসুদ আহমদ রনি/এএমকে