ধর্ষণের বিচার না পেয়ে দেশের বিজয় দিবসে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে অবশেষে মারা গেল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংরইল ইউনিয়নের এক মাদরাসাছাত্রী। সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে নিজ বাড়িতে মারা যায় এই ভুক্তভোগী। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবার ও স্থানীয়দের মধ‍্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

জানা যায়, দীর্ঘ তিন মাস ধর্ষকের হাতে নির্যাতনে প্রথমে ডান চোখ হারায় ছাত্রীটি। পরে অর্থাভাবে চিকিৎসা না করার কারণে অবশেষে আজ প্রাণ হারায়। ধর্ষণের বিচার চেয়ে না পেয়ে অসহায় এই মা-বাবা এখন মেয়েকে হারিয়ে দিশেহারা।

জানা যায়, ধর্ষণে অভিযুক্ত মো. হোসাইন সিংরইল ইউনিয়নের কুচুরী চরপাড়ার হানিফ মিয়ার ছেলে। সে বাকচান্দা আব্দুস সামাদ অ্যাকাডেমির দশম শ্রেণির ছাত্র। হোসাইন ওই ছাত্রীকে প্রেমের প্রস্তাবসহ বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত। একপর্যায়ে গত পহেলা জুন প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় ছাত্রীটিকে দলবলসহ উঠিয়ে নারায়ণগঞ্জে নিয়ে যায় হোসাইন। ওই সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শুরু হলে থানায় গিয়ে কোনো ধরনের আইনি সহায়তা পায়নি ছাত্রীর পরিবার। ফলে তার সন্ধানও পায়নি। এ ঘটনার পর গত ৬ সেপ্টেম্বর দুপুরে ছাত্রীকে বাড়ির সামনে ফেলে রেখে যায় হোসাইন। পরিবারের লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে ময়মনসিংহ এবং পরে ঢাকার আগারগাঁও চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ভর্তি করে। সেখানে বাম চোখ বাঁচাতে আঘাতপ্রাপ্ত ডান চোখটি উঠিয়ে ফেলা হয়, যা বর্তমানে ছাত্রীর বাড়ির ফ্রিজে সংরক্ষিত আছে। নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে ময়মনসিংহের নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে মামলা করা হলেও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।

এই বিষয়ে নান্দাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফরিদ আহম্মেদ বলেন, আমরা মৃত্যুর খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণের ব্যবস্থা করেছি।

মো. আমান উল্লাহ আকন্দ/এমজেইউ