ফরিদপুরে জিহাদ মাতুব্বর (১২) নামে এক স্কুল শিক্ষার্থীকে জ্যান্ত কবর দিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় রোববার (৮ ডিসেম্বর) দিবাগত রাতে কোতোয়ালি থানায় জিহাদের বাবা বাদী হয়ে ছয় তরুণের নাম উল্লেখ করে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।

এ ঘটনায় একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। ভিডিওতে দেখা যায়, কয়েকজন তরুণ ওই শিশুটিকে নিয়ে টানাহেঁচড়া করছে। এ সময় শিশুটি কান্নাকাটি করতে থাকে। ওই তরুণদের বলতে শোনা যায় ‘এখানে কবর খোঁচ, ওইখানে খোঁচ’। এক তরুণকে কোদাল দিয়ে মাটি খুঁড়তেও দেখা যায়।

জিহাদ ফরিদপুর সদরের কানাইপুর ইউনিয়নের বড় মাধবপুর গ্রামের ব্যবসায়ী মোস্তাক মাতুব্বরের ছেলে। চার ভাই ও এক বোনের মধ্যে সে বড়। জিহাদ মাতুব্বর কানাইপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

সোমবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে শহরের আলীপুর মহল্লায় অবস্থিত স্থানীয় একটি পত্রিকার কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলন করেন মোস্তাক মাতুব্বরসহ তার পরিবারের সদস্যরা।

সংবাদ সম্মেলনে মোস্তাক মাতুব্বর বলেন, গত শনিবার (৭ ডিসেম্বর)  রাতে তার ১২ বছর বয়সী স্কুল পড়ুয়া ছেলে জিহাদ ওয়াজ শুনে বাড়ি ফেরার সময় এলাকার বখাটে ও মাদককারবারি হোগলাকান্দি গ্রামের সিফাত মোল্যা (২৪), মাসুম শেখ (২৩), মারুফ শেখ (২০), শাকিল শেখ (১৯), আরাফাত মোল্যা (২০) ও মৃগী গ্রামের সজল (২২) জিহাদকে বেদম মারপিট শেষে স্থানীয় একটি গোরস্থানে নিয়ে কবর খুঁড়ে জ্যান্ত পুঁতে হত্যার চেষ্টা করে।

ওই সময় তারা জিহাদকে দিয়ে আমার কাছে ফোন দিয়ে বলতে বলে, ‘তোর আব্বাকে মোবাইল ফোন করে বল আমরা তোকে ধরে এনেছি। তোকে ছাড়িয়ে নিতে হলে ৫ লাখ টাকা দিতে হবে। তোর আব্বা টাকা না দিলে তোকে খুন করে কবর দিয়ে দেব।’ এ কথা বলতে জিহাদ অস্বীকার করলে আসামিরা ছেলেকে নির্মমভাবে মারধর করে। এক পর্যায়ে তরুণরা মাটি কেটে আমার ছেলেকে জ্যান্ত কবর দেওয়ার চেষ্টা করে।

কিছুক্ষণ পরেই আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে কোনোমতে পালিয়ে জিহাদ রক্ষা পায়। ওই রাতেই তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।

জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদউজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় কোতোয়ালি থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখার জন্য এসআই ফাহিম ফয়সাল তরফদারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার এসআই ফাহিম ফয়সাল তরফদার বলেন, প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, মোস্তাক মাতুব্বর নিজে একজন মাদক ব্যবসায়ী। তার বাড়িতে নিয়মিত জুয়ার বোর্ড বসে। এই জুয়া ও মাদক নিয়ে এলাকার তরুণদের সঙ্গে তার (মোস্তাক মাতুব্বর) টাকা-পয়সার লেনদেন নিয়ে বিরোধ ছিল। সেই বিরোধের জেরে মোস্তাকের ছেলেকে ভয় দেখানোর জন্য এ ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে। এ ব্যাপারে তদন্ত কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

জহির হোসেন/এএমকে