শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) নানা অনিয়ম নিয়ে আয়োজিত বালুমহালের দুই ইজারাদারের সংবাদ সম্মেলন পণ্ড করে দিয়েছেন ইউএনও মাসুদ রানা। এ সময় দুই ইজারাদারকে তুলে আনতে গিয়ে অসংলগ্ন কথাবার্তায় সংবাদকর্মীদের তোপের মুখে ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসেন তিনি। গতকাল সোমবার (২ ডিসেম্বর) দুপুরে নালিতাবাড়ী শহরের উত্তর গড়কান্দা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, জিলানী এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কাদির জিলানী নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানার বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ এনে দুপুরে তার বাস ভবনে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এতে জেলার প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে ইউএনও মাসুদ রানা ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিসুর রহমান পুলিশ নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হন। তারা সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে সাংবাদিকদের সামনে থেকে বালুমহালের ইজারাদার জিলানী ও হারুন-অর-রশিদকে আটকের চেষ্টা করেন। এ সময় সাংবাদিকরা আটকের কারণ জানতে চাইলে ইউএনও বিষয়টি পরে জানানোর কথা বলেন। একপর্যায়ে ইজারাদারদের স্বৈরাচারের দোসর আখ্যা দিয়ে ইউএনও অসংলগ্ন কথাবার্তা বলতে শুরু করলে গণমাধ্যমকর্মীদের তোপের মুখে পড়েন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে ইজারাদার আব্দুল কাদির জিলানী জানান, ইউএনও মাসুদ রানা নিজে লাভবান হওয়ার জন্য নিয়ম বহির্ভূতভাবে ইজারার স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বালু উত্তোলনে বাধা সৃষ্টি করেন। এছাড়া নিলামে জব্দকৃত বালু জেলা প্রশাসন থেকে নিলাম কমিটি গঠনের আগেই এবং উপজেলা প্রকৌশলীর বালুর মূল্য সংক্রান্ত লিখিত মতামত উপেক্ষা করে কম রেটে গোপনে তড়িঘড়ি করে ৬ কোটি টাকার বালু মাত্র ৯৪ লাখ টাকা নিলামে বিক্রি করেন।  ইউএনওর নির্দেশে ইজারাকৃত জায়গার বাইরে নিলাম গ্রহীতারা অবৈধভাবে মিনি ড্রেজার বসিয়ে নদীর তীর ভেঙে প্রতিদিন প্রায় অর্ধকোটি টাকা মূল্যের বালু উত্তোলন করে বিক্রি করেন। এভাবে ইউএনওর পরোক্ষ মদদে ৪৪ দিন চলে নিলামগ্রহীতাদের অবৈধ বালু উত্তোলন। এ বিষয়ে তারা বিভিন্ন সময় প্রতিকার চেয়েও প্রতিকার পাননি বলে অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বালু ব্যবসায়ী জিলানী ইউএনও কর্তৃক মিথ্যা মামলা ও মোবাইল কোর্টে হয়রানিসহ নানা শঙ্কা প্রকাশ করে অভিযোগ আনেন। এর পরপরই ইউএনও ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) পুলিশ নিয়ে হাজির হন এবং সংবাদ সম্মেলন বন্ধ করে তাদের আটক করার চেষ্টা করেন।

তবে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুদ রানা তার বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করেন।

তিনি জানান, বিগত সরকারের আমল থেকে এ সকল ইজারাদার ও বালুখেকোরা অন্যায়ভাবে নদী ভেঙে বালু উত্তোলন করে আসছে, যা সম্পূর্ণ বেআইনি। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ব্যপারে আমরা কোনো আপস করব না।

নাইমুর রহমান তালুকদার/আরএআর