রংপুরে হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ
আদালত প্রাঙ্গণে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে হত্যার বিচার ও ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি জানিয়ে রংপুরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে ইসকনের সকল কার্যক্রম বন্ধ করাসহ নিষিদ্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছেন সংগঠনটির নেতারা।
রোববার (১ ডিসেম্বর) বিকেলে রংপুর পাবলিক লাইব্রেরি মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি পায়রা চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড় ও প্রেসক্লাব চত্বর হয়ে কাচারি বাজারে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে ইসকনকে উগ্রবাদী জঙ্গি সংগঠন অ্যাখ্যা দিয়ে সংগঠনটি নিষিদ্ধের দাবিতে জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
বিজ্ঞাপন
পরে পাবলিক লাইব্রেরি মাঠে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা মুহাম্মাদ ইউনুছ, রংপুর জেলা শাখার আহ্বায়ক হাফেজ ইদ্রীস আলী, রংপুর জেলা সদস্য সচিব মাওলানা রেজাউল করীমসহ জাতীয় ও স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের পরাজিত স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ ভারতের মাধ্যমে হিন্দুদের একটি অংশকে ব্যবহার করে এদেশে শান্তি বিনষ্টের ঘৃণ্য অপচেষ্টা করছে। ভারতের প্রত্যক্ষ মদদেই ইসকন বিভিন্ন অপপ্রচার চালিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে।
তারা আরও বলেন, বাংলাদেশে ইসকনের ইতিহাসের পুরোটাই মারামারি, হানাহানি এবং উগ্রতায় ভরপুর। বিভিন্নভাবে সন্ত্রাসী কায়দায় ভূমি দখল, মন্দির দখল ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের ঘটনা অহরহই ঘটিয়ে চলেছে তারা। দেশের সকল শ্রেণির মানুষের পাশাপাশি সরকার ও বিভিন্ন সংস্থাগুলো যখন জানাচ্ছে যে, বর্তমানে হিন্দুরা পূর্বের যে কোনো সময়ের চেয়ে বেশি নিরাপত্তায় রয়েছে, তখন ভারতের ইশারায় ইসকন মিথ্যা তথ্য ও গুজব রটিয়ে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানোর ষড়যন্ত্র করছে।
বক্তারা বলেন, আমরা মনে করি, ভারতীয় প্রেসক্রিপশনে ইসকনের মাধ্যমে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে চট্টগ্রামের আদালত পাড়ায় মুসলমানদের পবিত্রতম স্থান মসজিদ ভাঙচুর করে সংখ্যাগরিষ্ঠ নাগরিকদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করা হয়েছে। পূর্বপরিকল্পিত ছক অনুযায়ীই আদালত প্রাঙ্গণে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও জবাই করে শহীদ করেছে ইসকন সদস্যরা। অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের জোরালো দাবি, এমন ভয়াবহ অবস্থায় অনতিবিলম্বে ইসকনের সকল কার্যক্রম বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে হবে, চট্টগ্রামে আইনজীবী হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে হবে এবং মসজিদ ভাঙচুরের ঘটনায় দোষীদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
সমাবেশে হেফাজত নেতারা বলেন, বাংলাদেশে ভারতীয় আগ্রাসনকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার কোন সুযোগ নেই। সরকার যদি ইসকনকে নিষিদ্ধ করতে গড়িমসি করে এবং ষড়যন্ত্রকারীদের ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আগামীতে ধারাবাহিক আন্দোলনেরও হুঁশিয়ারি দেন হেফাজত নেতৃবৃন্দ।
বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে রংপুর মহানগরীর বিভিন্ন মাদরাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা অংশ নেন।
ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর