পটুয়াখালীতে দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে কিডনি রোগীর সংখ্যা। তাদের মধ্যে অধিকাংশ রোগীর রক্ত ছেঁকে শরীর থেকে তরল বর্জ্য বের করতে ডায়ালাইসিসের প্রয়োজন হয়। সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে জেলা পর্যায়ে সরকারিভাবে ডায়ালাইসিস সেন্টার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় সরকার। 

তবে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও, এখন পর্যন্ত চালু হয়নি সেই ডায়ালাইসিস সেন্টার। এতে ভোগান্তির পাশাপাশি বেড়েছে চিকিৎসার খরচ।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, সাধারণ কিডনি রোগীদের চিকিৎসার আওতায় আনতে দেশের প্রতিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫০ শয্যা এবং জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার কিডনি ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপনের প্রকল্প হাতে নেয় সরকার। সম্পূর্ণ সরকারি অর্থায়নের এই প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয় ৩০০ কোটি টাকার বেশি। প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০২০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। যা পরবর্তী সময়ে বর্ধিত করা হয় ২০২৪ সাল পর্যন্ত। 

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলে দেখা যায়, ১০ শয্যা ডায়ালাইসিস সেন্টারের জন্য অবকাঠামো নির্মাণ হলেও কোনো ধরনের মেশিনারিজ আসেনি। এদিকে জেলা হাসপাতালের মতো গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ডায়ালাইসিস সেন্টার স্থাপন না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কিডনি রোগী ও স্থানীয়রা। 

শহরের নন্দকানাই এলাকার বাসিন্দা সুমন হালদার বলেন,‘আমার ছোট ছেলে জন্মের পর থেকেই কিডনি রোগে ভুগেছে। প্রতি সপ্তাহে বরিশাল গিয়ে তাকে ডায়ালাইসিস করাতে হতো। পরে ভারতে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ১৪ লাখ টাকা। জেলায় যদি একটা সরকারি ডায়ালাইসিস সেন্টার থাকতো তাহলে আমাদের দুর্ভোগ লাঘবের পাশাপাশি অর্থ খরচও কম হতো।

চৌরাস্তা এলাকার বাসিন্দা ফয়সাল আহমেদ জামাল বলেন,‘আমরা অনেক সমস্যায় আছি। এখানে বেসরকারিভাবে ডায়ালাইসিস করাতে অনেক টাকা খরচ হয়। আমার প্রতি সপ্তাহে দুইবার ডায়ালাইসিস করাতে হয়, প্রতি ডায়ালাইসিসে খরচ হয় ২৮শ টাকা। এখানে একটা সরকারি সেন্টার থাকলে তো আমরা কম টাকায় করাতে পারতাম।’ 

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা. দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, এইটা প্রকল্পের আওতায় করা হচ্ছে। তারাই বলতে পারবে তারা কাজটা কবে নাগাদ শেষ করতে পারবে। তবে এখনো কোনো ধরনের যন্ত্রপাতি কেনা হয়নি এবং লোকবলও নিয়োগ দেওয়া হয়নি।

গণপূর্ত অধিদফতরে উপ-বিভাগীয় প্রকোশলী পিন্টু তালুকদার বলেন,‘ আমরা হাসপাতালের তিন তলায় ১২-১৫ লাখ টাকায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট একটি রুম রেডি করছি। রুমটি গত ৪-৫ মাস আগে রেডি আছে। তিন্তু তারা বুঝে নিচ্ছেন না।’

২০২৩ সালের জুন মাসে ১৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা ব্যায়ে পটুয়াখালীতে ১০ শয্যার সেন্টারের জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে কার্যক্রম সম্পন্ন করা যাবে বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

রায়হান/আরকে