নওগাঁয় সন্ত্রাসীদের গুলিতে আহত সাবেক যুবদল নেতা আব্দুল মজিদ (৫৮) মারা গেছেন। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফেরার দুই দিন পর সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

নিহত আব্দুল মজিদ জেলা যুবদলের সাবেক সদস্য। তিনি নওগাঁ সদর উপজেলার বোয়ালিয়া ইউনিয়নের সাহাপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২ নভেম্বর রাত সাড়ে ৯টার দিকে আব্দুল মজিদ তার দুই ভাই কাবিল হোসেন (৩৮) ও শফিকুল ইসলামকে (৪৫) নিয়ে শহরের ইয়াদ আলীর মোড়ে গোশতের দোকানে বসে কথাবার্তা বলছিলেন। ওই সময়ে আকস্মিক চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও আওয়ামী লীগের ক্যাডার হিসেবে পরিচিত মোহাম্মদ আলী ওরফে আলীর নেতৃত্বে ৪ থেকে ৫ জন মোটরসাইকেল যোগে এসে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে মজিদকে লক্ষ্য করে গুলি করে। এরপর তিন ভাইকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে রক্তাক্ত জখম করে ফেলে রেখে পালিয়ে যায়। ঘটনার সময় স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে পালানোর সময় ১টি শটগান ও ১টি মোটরসাইকেল ফেলে রেখে যায় হামলাকারীরা।

ঘটনার পর স্থানীয়রা গুলিবিদ্ধ ও আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ২৫০ শয্যা নওগাঁ জেনারেল হাসলপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে তাকে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা। এর কয়েকদিন পর কাবিল ও শফিকুল সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে অবস্থা গুরুতর হওয়ায় আব্দুল মজিদকে টানা ২১ দিন শজিমেকে চিকিৎসাধীন থাকতে হয়।

সর্বশেষে শনিবার (২৩ নভেম্বর) অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে বাড়ি ফেরেন আব্দুল মজিদ। তবে সোমবার (২৫ নভেম্বর) দিবাগত রাত ২টার দিকে হঠাৎ যন্ত্রণায় কাতর হয়ে তিনি মারা যান। পরে মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে আব্দুল মজিদের মরদেহ দাফন করা হয়। এতে জেলা বিএনপি ও দলটির অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।

এদিকে হামলার ঘটনার ২৩ দিন অতিবাহিত হলেও পুলিশ এখনো প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলী ওরফে আলীকে গ্রেপ্তার করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে নিহত আব্দুল মজিদের পরিবার। 

আব্দুল মজিদের ভাই কাবিল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, ঘটনার পর থেকে আমরা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। অথচ এখনো প্রধান আসামিকে গ্রেপ্তার এবং মামলার অগ্রগতিতে পুলিশ গড়িমসি করছে। আমার ভাইয়ের হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

এবিষয়ে জানতে চাইলে নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক নান্নু বলেন, চিহ্নিত আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তার করতে না পারলে তারা সংঘটিত হয়ে এলাকায় আবারও খুনসহ যে কোনো অঘটন ঘটাতে পারে। তাদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে পুলিশ সুপারের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তারে যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আব্দুল মজিদ ও তার ভাইদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িত পাঁচজনকে ইতোপূর্বে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। প্রধান আসামি মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে। আশা করছি শিগগিরই তাকেও আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে।

আরএআর