বাগেরহাট জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ এইচ সেলিম বলেছেন, কারা কি করছেন সবকিছু বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে আছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের কাছে আমার অনুরোধ বুঝেশুনে কাজে করবেন। তিনি বলেন, আমি সংসদ সদস্য হলে বাগেরহাটে চাঁদাবাজ ও টেন্ডারবাজদের স্থান হবে না। একটা কথা মনে রাখবেন, আমি শুধু একটা শ্রেণি বা দলের এমপি হব না, আমি বাগেরহাট জনগণের এমপি হব।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে প্রায় দেড়যুগ পরে বাগেরহাট সদর উপজেলার বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রকাশ্য জনসভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

দীর্ঘদিন বাগেরহাট না আসা ও রাজনীতি থেকে দূরে থাকার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, স্বৈরাচার সরকারের সময় আমাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানো হয়। একটি জনসভায় বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় আমাকে এক নম্বর আসামি করা হয়েছিল। মূলত আমাকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য এমন ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আমি তখন দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে জানিয়ে শুধু জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি নিয়েছি। তবে দল থেকে অব্যাহতি নেইনি এবং এখনো দলের সঙ্গে আছি।

ভবিষ্যতে বাগেরহাটের উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বাগেরহাটবাসীর চাওয়ায় আমি সংসদ সদস্য হলে একটি মেডিকেল কলেজ করব, জেলা স্টেডিয়ামের পাশে যার জন্য জমি ক্রয় করা রয়েছে। এ ছাড়া কচুয়ার গোয়ালমাঠ এলাকায় থাকা মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর করব। এ ছাড়া বাগেরহাটবাসীর উন্নয়নে সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করার প্রুতিশ্রুতি দেন তিনি।

বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি ও কচুয়া উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান শেখ নজরুল ইসলাম, জেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি ফকির তরিকুল ইসলাম, মেহেবুবুল হক কিশোর, শেখ মাহবুর রহমান টুটুল, কচুয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শিকদার নুরুল আমিন, সাধারণ সম্পাদক শেখ হাবিবুর রহমান প্রমুখ।

উল্লেখ্য, সিলভার লাইন গ্রুপের মালিক বাগেরহাট সদর উপজেলার মুক্ষাইট গ্রামের বাসিন্দা বীরমুক্তিযোদ্ধা এম এ এইচ সেলিম ৯০-এর দশকের শেষ দিকে বাগেরহাটের রাজনীতিতে আসেন এবং জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই প্রভাবশালী নেতা শেখ হেলাল উদ্দিনকে হারিয়ে বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। সংসদ সদস্য থাকাকালীন মুনিগঞ্জ সেতু, শহররক্ষা বাধ, মাজেদা বেগম কৃষি প্রযুক্তি কলেজ, বেলায়েত হোসেন ডিগ্রি কলেজসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেন তিনি। বিএনপি ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পরে তত্ত্ববধায়ক সরকারের আমলে তিনি জেলা বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে তাকে প্রকাশ্য রাজনীতিতে যেমন দেখা যায়নি, বাগেরহাটেও তেমন আসেননি।

শেখ আবু তালেব/এএমকে