সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার চাঞ্চল্যকর ব্যবসায়ী হাসান মিয়া হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে সিলেট অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক সৈয়দা আমিনা ফারহিন এ রায় দেন। 

রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের পেশকার মো. সোহেল রানা।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার হাসামপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মবশ্বিরের ছেলে আব্দুস সবুর পুতুল, তার ছেলে ফাহাদ আহমদ রাহী ও আব্দুল মোমিন রণি। তাদের মধ্যে আব্দুস সবুর পুতুল কারাগারে থাকলেও দণ্ডিত তার দুই ছেলে ফাহাদ আহমদ রাহী ও আব্দুল মোমিন রণি পলাতক রয়েছেন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ২২ মে রাত ১০টা ৪০ মিনিটের দিকে উপজেলার একই হাসামপুর হাফিজিয়া মাদরাসার নিজ মালিকানাধীন হাসান ফার্মেসি অ্যান্ড ভ্যারাইটিজ স্টোরে হাসান মিয়াকে (২৮) ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়। নিহত হাসান মিয়া হাসামপুর গ্রামের মৃত নজরুল ইসলামের ছেলে। ঘটনার পর দিন নিহতের ছোট ভাই হোসাইন আহমদ সাহান (২৪) বাদী হয়ে ২৩ মে বালাগঞ্জ থানায় চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও দুইজনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, হাসামপুর বায়তুন নুর জামে মসজিদে তারাবির নামাজের পর মুসল্লিদের মধ্যে লিচুর জুস সরবরাহ করতেন হাসান মিয়া। সরবরাহকৃত জুসের মূল্য পরিশোধ করতেন মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা ফারুক মিয়া। হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হওয়ার রাত ১০টা ১০ মিনিটে ফারুক মিয়া লিচুর জুসের মূল্য বাবদ ২৫০০ টাকাসহ অগ্রিম আরও ২৫০০ টাকা বিবাদি রাহীর মাধ্যমে হাসানের কাছে পাঠান। কিছুক্ষণ রাহির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে হাসানের বাকবিতণ্ডার হয়। এ সময় রাহীর পক্ষ নিয়ে অন্য আসামিরাও কিলঘুষি মারেন। একপর্যায়ে রাহি তার হাতে থাকা ছুরি দিয়ে হাসানের ডান কনুইয়ের নিচে, ডান বগলের নিচে, কোমরে, পেটের বামপাশসহ শরীরের অন্যান্য স্থানে ছুরিকাঘাত করে। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে সিলেট এমএমজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

মামলাটি পিবিআইয়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ দাস তদন্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র (নং-৫৯) দাখিল করেন। মামলাটি অত্র আদালতে দায়রা  (নং-২৭৫/’১৯) মূলে রেকর্ডের পর বিচারকাজ শুরু হয়। এরপর ২০১৯ সালের ১১ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের পর ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালতের বিচারক এ রায় দেন। 

মাসুদ আহমদ রনি/আরএআর