বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ওলামা বিভাগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বলেন, কওমি-আলিয়া সব ভেদাভেদ ভুলে দ্বীনে ইসলাম প্রতিষ্ঠায় সব আলেমদের এক হয়ে কাজ করতে হবে। স্বৈরাচার সরকার প্রধান শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের অবিলম্বে দেশে নিয়ে এসে বিচার করতে হবে। দোসররা এখনো মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। সে জন্য আলেম-ওলামাদের সজাগ থাকতে হবে।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) নগরীর আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী খুলনা মহানগরীর ওলামা বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ওলামা সম্মেলন প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আলেমদের উদ্দেশ্য করে বলেন, আলেমদের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো পূর্ণাঙ্গ দ্বীন ইসলামের প্রচার ও প্রসারের কাজ করা। আর আমাদের  দেশের প্রতিটি মসজিদ হবে দ্বীন চর্চার কেন্দ্র, ইসলাম প্রচারের ও প্রসারের প্রধান কেন্দ্রবিন্দু। সেই লক্ষ্যে আমাদের আলেম সমাজকে কাজ করতে হবে। তিনি আরও বলেন, এদেশে দ্বীন ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য যে আন্দোলন চলছে সে আন্দোলনে সব মতের আলেমদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই। আলেমগণ ঐক্যবদ্ধ হলে ইসলামের বিজয় নিশ্চিত হবে। এই ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টাকে সফল করতে জামায়াতে ইসলামী সব ধরনের ছাড় দিতে প্রস্তুত রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, দল-মত-নির্বিশেষে সব মারকাজের উলামা-মাশায়েখ ও ইসলামী নেতাদের ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থে, দ্বীনের স্বার্থে, দেশ রক্ষার স্বার্থে, সর্বোপরি অপরাধমুক্ত আদর্শ ইসলামী সমাজ গড়ার লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যুগে যুগে বিভিন্ন দেশে বিশেষ করে ভারতীয় উপমহাদেশের স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখা, দেশ গঠন, সমাজ উন্নয়ন, সমাজ সংস্কার ও আদর্শ সমাজ বিনির্মাণে ওলামায়ে-কেরাম গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন। আমরা উলামায়ে কেরাম যে মতের যে পথের বা যে দলেরই হই না কেন, আমরা যদি মৌলিক বিষয়ে এক থাকতে পারি, তাহলে এদেশে ইসলামের বিজয় কেউ ঠেকাতে পারবে না, ইনশাআল্লাহ। একটু খেয়াল করলে দেখবেন, ময়দান যেদিকে যাচ্ছে, সাধারণ মানুষও সেদিকেই ঝুঁকছে। এতে বোঝা যায় দেশের মানুষ নতুন কিছু পেতে চায়, নতুন একটা ধারা চায়। আর সেটি হলো ইসলামী ধারা, সেটি হলো খেলাফতে রাশেদীনের ধারা, ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, ঐক্যের প্রয়োজনীয়তা, শরয়ী হাইসিয়াত, দেশ গঠন ও উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনে সর্বস্তরের আলেম-ওলামা, পীর-মাশায়েখ এবং মারকাজ, দরবার ও মাকতাবে ফিকারের ওলামায়ে কেরামতকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. মাওলানা মুফতি খলিলুর রহমান মাদানী বলেন, কেবলমাত্র ওলামায়ে কেরামের ইমামতিতেই এদেশে শিরক-বিদয়াতমুক্ত, অপরাধ, দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসমুক্ত সমাজ গঠন সম্ভব। দল-মত-নির্বিশেষে আমাদের এক হতে হবে। আমাদের অতীতের সব ভেদাভেদ ভুলে যেতে হবে। আমাদের আর কোনো রাজনৈতিক দলকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।

মহানগরী ওলামা বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা ও মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্ম পরষিদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যক্ষ মাওলানা মশিউর রহমান।

খুলনা মহানগরীর ওলামা বিভাগের সেক্রেটারি মাওলানা আবু বকর সিদ্দিকের পরিচালনায় বক্তব্য দেন উলামা-মাশায়েখ কমিটির মহানগরী সভাপতি মাওলানা আ ন ম আব্দুল কুদ্দুস, দারুল কুরআন সিদ্দিকীয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. ইদ্রীস আলী, খুলনা আলিয়া কামিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মাওলানা মুফতি আব্দুর রহিম সরদার, খুলনা নেছারিয়া কামিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা ডি এম নূরুল ইসলাম, সাবেক অধ্যক্ষ মাওলানা মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, তালিমুল মিল্লাত মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা এ এফ এম নাজমুস সউদ। কুরআন তেলাওয়াত করেন হাফেজ মাওলানা হাবিবুল্লাহ। ইসলামী সংগীত পরিবেশন করেন মাওলানা আব্দুল করিম। 

মোহাম্মদ মিলন/আরকে