পাহাড়ি নদী সাঙ্গুর বুকে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা
আবহমান গ্রাম বাংলার চিরাচরিত ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার দেখা মিলল এবার পাহাড়ে। পাহাড়ি নারী ও পুরুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এই প্রতিযোগিতায়। বাদ্দের তালে তালে সাঙ্গু নদীর স্বচ্ছ জলরাশির মধ্যে বাইচ প্রতিযোগীদের বৌঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দে এক অন্য রকম অনুভূতির জন্ম দিয়েছে সবার মনে। দীর্ঘ দিন পর গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পেরে খুশি প্রতিযোগীরাও।
আগত দর্শনার্থীরা বলছেন, গ্রাম বাংলার এসব প্রতিযোগিতা অনেকটা হারিয়ে যাওয়ার পথে। সাঙ্গু নদীতে এ ধরনের প্রতিযোগিতা দেখা হয়নি। এ প্রথম দেখছি, সবাই মিলে অনেক আনন্দ করেছি।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে সাঙ্গু নদীতে সম্মিলিত ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান থানজামা লুসাই প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।
এদিকে সকাল সাড়ে ১০টায় উজানী পাড়া সাঙ্গু নদীর ঘাট থেকে শুরু হয় এ প্রতিযোগিতা। জেলা শহরের বিভিন্ন পাড়া থেকে যুবক-যুবতীরা দল বেঁধে প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়। প্রতিটি নৌকায় ৮ জন মাঝি বৈঠার তালে গান গেয়ে নিজেদের উদ্যোমী করে তাদের নৌকা নিয়ে এগিয়ে যায়।
প্রতিযোগিতায় জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ১১টি পুরুষ ও ৭টি নারী দল অংশ গ্রহণ করে। আগামী ৩০ নভেম্বর পুরস্কার বিতরণের মধ্য দিয়ে শেষ হবে সপ্তাহব্যাপী এই ক্রীড়া মেলা।
নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতাকে ঘিরে সাঙ্গু নদীর তীরে পাহাড়ি-বাঙ্গালীসহ পর্যটকদের অংশগ্রহণে এক মিলন মেলায় পরিণত হয়। নেচে গেয়ে এই নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন সবাই।
সম্মিলিত ক্রীড়া পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত সপ্তাহব্যাপী এই ক্রীড়া মেলায় রয়েছে নৌকা বাইচ, তৈলাক্ত বাঁশ আরহণ, টেবিল টেনিস, ক্রিকেট, ফুটবল, কাবাডি, বলি খেলাসহ স্থানীয় শিল্পীদের অংশগ্রহণে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
যুবসমাজকে মাদক ও অসামাজিক কার্যকলাপ থেকে দূরে রাখতে এই ধরনের প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছে বলে জানান আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক নিনিপ্রু মারমা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, বান্দরবান সেনা জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মাহমুদুল হাসান পিএসসি, বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার শহীদুল্লাহ কাউছারসহ জেলা প্রশাসন ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
শহীদুল ইসলাম/আরকে