স্বামীর ফোনে প্রেমিকের মেসেজ, বিয়ের ৪ দিন পর লাশ হলেন নববধূ
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে স্বামীর মোবাইল ফোনে সাবেক প্রেমিকের পাঠানো ভিডিওর জেরে প্রাণ দিতে হলো নববধূ ফাহিমা আক্তার পপিকে (২২)।
শনিবার (২৩ নভেম্বর) সকালে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকার ওয়ান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এর আগে, গত বুধবার (২০ নভেম্বর) বিকেলে উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের নিজ বাড়ির পাশে এক আত্মীয় বাড়িতে পপি গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।
বিজ্ঞাপন
এ ঘটনায় নিহতের চাচা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গৃহবধূর সাবেক প্রেমিক মহিন ইসলাম রিয়াদ ও স্বামী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে মাসুদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।
নিহত পপি উপজেলার চরবাটা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের মো. সেলিমের মেয়ে। তিনি সৈকত সরকারি কলেজে বিএ প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন।
আরও পড়ুন
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, নিহত পপি স্থানীয় সৈকত সরকারি কলেজের ছাত্রী ছিল। কলেজে পড়াশুনা করার সময় পপির সঙ্গে মহিন ইসলাম রিয়াদের পরিচয় হয়। কিন্তু পারিবারিকভাবে গত সোমবার ১৮ নভেম্বর সন্ধ্যায় বিজিবি সদস্য আব্দুল্লাহ আল মাহমুদের সঙ্গে পপির বিয়ে হয়। বিয়ের পর রিয়াদ পপির স্বামী মাহমুদের কাছে তার সঙ্গে প্রেমের কথা জানান। এরপর রিয়াদ ও পপির সংসার ভাঙার জন্য তার সঙ্গে পপির বিভিন্ন মেসেজ, ভিডিও তার স্বামীর মোবাইল ফোনে পাঠাতে শুরু করেন। এ নিয়ে মাহমুদ ও তার পরিবারের সদস্যরা পপির চরিত্র ভালো না বলে বিভিন্ন অপবাদ দেন। পরবর্তী সময়ে মাহমুদ পপির সঙ্গে সংসার করবে না বলে জানান। গত বুধবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ির পাশে এক আত্মীয়ের বাড়িতে পপি গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। তাৎক্ষণিক পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে গেলে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
চরজব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহীন মিয়া ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিহতের চাচা বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে গৃহবধূর সাবেক প্রেমিক মহিন ইসলাম রিয়াদ ও স্বামী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ওরফে মাসুদসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠনো হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
হাসিব আল আমিন/আরকে