পাহাড়িয়া জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষা ‘মালত সাবা’ কি-বোর্ডের উদ্বোধন করা হয়েছে। ২৯৫তম কি বোর্ডের ভাষা হলো ‘মালত সাবা’। আদিবাসীরা তাদের ভাষায় কথা বলতে পারেন, কিন্তু নিজের মাতৃভাষায় লেখালেখি করতে পারেন না এমন সমস্যা আর থাকলো না।

পাহাড়িয়াদের মাতৃভাষায় ‘মালত সাবা’ কি-বোর্ডের হরফ তৈরি করেছেন পাহাড়িয়া গবেষক অভিলাষ বিশ্বাস পাহাড়িয়া। তিনি ২০১২ সালে এই কি-বোর্ড তৈরি করা শুরু করেন। তার সঙ্গে ছিলেন, পাহাড়িয়া শিলা বিশ্বাস।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় রাজশাহীর লিলিহল মোড় এলাকার রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ কি-বোর্ডের
উদ্বোধন করা হয়। রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমি ও পাহাড়িয়া পরিষদের যৌথ আয়োজনে প্রধান অতিথি ছিলেন, বিভাগীয় কমিশনার ও একাডেমির নির্বাহী সভাপতি ড. দেওয়ান মোহাম্মদ হুমায়ূন কবীর।

তিনি পাহাড়িয়া ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মাতৃভাষা চর্চার প্রতিবন্ধকতা ও উত্তরণে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভা শেষে পাহাড়িয়া মাতৃভাষার কি-বোর্ডের উদ্বোধন করেন। আলোচনা সভার শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য দেন, অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব ও রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির উপ-পরিচালক বেনজামিন টুডু।

রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির ইন্সট্রাক্টর মানুয়েল সরেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে কালচারাল একাডেমির পক্ষ থেকে পাহাড়িয়া জাতিগোষ্ঠীর মাতৃভাষার কি-বোর্ডের বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন, একাডেমির নির্বাহী সদস্য ও সোনার দেশ পত্রিকার সম্পাদক আকবারুল হাসান মিল্লাত।

সেখানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন রাজশাহী বিভাগীয় ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর কালচারাল একাডেমির নির্বাহী পরিষদের সদস্য মিসেস শেলী প্রিসিল্লা বিশ্বাস, আদিবাসী ভাষা প্রযুক্তিবিদ সমর মাইকেল সরেন, নবাই বটতলা ধর্মপল্লীর সহকারী পাল-পুরোহিত ফাদার আরতুরো স্পেজিয়ালে পিমে ও পাহাড়িয়া পরিষদের নির্বাহী পরিচালক অভিলাষ বিশ্বাস। এছাড়াও আরও বক্তব্য দেন, আদিবাসী ভাষা বিশেষজ্ঞ মৃদুল সাংমা।

কি-বোর্ড তৈরিতে কাজ করা শিলা বিশ্বাস বলেন, ‘মালত সাবা’ কি-বোর্ড তৈরি করা হয়েছে এটি আমাদের আনন্দের বিষয়। এর মাধ্যমে আমাদের ভাষা সারা বিশ্ব জানবে। আগে আমরা মূলত এই ভাষাটা মুখে বলতাম। কিন্তু এখন আমরা বিভিন্ন জায়গার লিখতে পারবো।

পাহাড়িয়া গবেষক ও ‘মালত সাবা’ কি-বোর্ডের হরফ তৈরিকারক অভিলাষ বিশ্বাস পাহাড়িয়া বলেন, ২০১২ সাল থেকে এই কি-বোর্ড তৈরি কাজ শুরু করি। দীর্ঘ ১২ বছর কাজ করা হয়েছে কি-বোর্ডটি তৈরির লক্ষ্যে।

শাহিনুল আশিক/এফআরএস