বরগুনার আমতলী উপজেলায় দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসের কাউন্টার দখলে নিতে হামলা চালিয়ে সেগুলোতে তালা লাগিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ৮ থেকে ১০টি কাউন্টার ভাঙচুরসহ বিভিন্ন মালামাল লুটের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা জালাল উদ্দিন ফকিরের ছেলে রাহাত ফকিরের বিরুদ্ধে। হামলার শিকার কাউন্টারের দায়িত্বরতরা এ অভিযোগ করেন।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে আমতলী পৌরসভার নতুন বাজার বটতলা নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আমতলী উপজেলা বিএনপির বহিষ্কৃত সাবেক সভাপতি জালাল উদ্দিন ফকিরের ছেলে রাহাত ফকির প্রায় দেড় শতাধিক লোকজন নিয়ে পৌরশহরের নতুন বাজার বটতলা নামক এলাকায় আসেন। এ সময় তাদের সঙ্গে থাকা দেশিও অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে ওই এলাকায় থাকা দূরপাল্লার বিভিন্ন বাসের কাউন্টারে হামলা চালানো হয়। কাউন্টারগুলোতে থাকা চেয়ার টেবিল ভাঙচুরসহ ল্যাপটপ, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরা, টিকিট বিক্রির নগদ টাকাও লুটপাট করে নিয়ে যান তারা। এছাড়া কাউন্টার দখলে নিতে হামলাকারীরা কাউন্টারগুলো তালাবদ্ধ করেন। পরে খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা খুলে দিলে কাউন্টারের দায়িত্বরতা ভেতরে প্রবেশ করেন।

হামলার শিকার সৌদিয়া পরিবহনের আমতলী কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা ম্যানেজার শফিউল বাসার লালন বলেন, সন্ধ্যার দিকে জালাল ফকিরের ছেলে রাহাত ফকিরের নেতৃত্বে প্রায় ১০০-১৫০ জন সবগুলো কাউন্টারে হামলা চালান। এ সময় আমার কাউন্টারের একটি টেবিল ও ১২টি চেয়ার ভাঙচুরসহ কাউন্টারে থাকা ২৭ হাজার টাকা নিয়ে গেছেন তারা। এছাড়াও কাউন্টারে থাকা বাস যাত্রীদের মধ্যেও কয়েকজন আহত হয়েছেন। হামলাকারীরা দেশীয় বিভিন্ন অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে এসে শুধু তিনটি পরিবহনের কাউন্টার ব্যতীত সব কাউন্টার ভাঙচুর করেন। পরে কাউন্টারে তালা লাগিয়ে গেলে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা এসে আমাদের তালা খুলে দেন।

সেবা গ্রিনলাইন পরিবহনের আমতলী কাউন্টারের দায়িত্বে থাকা মো. আরিফ বলেন, কাউন্টারে বসে আমি বাসের টিকিট বক্রি করছিলাম। টিকিটে যাত্রীদের নাম লিখছি, এমন সময় তারা এসে টেবিলের ওপর আঘাত করলে আমি উঠে সরে যাই। পরে তারা কাউন্টার থেকে দুইটি ল্যাপটপ, প্রিন্টিং মেশিন, কম্পিউটার, সিসি ক্যামেরাসহ প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা নিয়ে যান। এছাড়াও আমাদের টেবিল-চেয়ার ভাঙচুর করে তাদের টেবিল-চেয়ার কাউন্টারে ঢুকিয়ে তালাবদ্ধ করে চলে যান হামলাকারীরা। পরে প্রশাসনের উপস্থিতিতে তালা খুলে আমরা কাউন্টারে প্রবেশ করি।

এ বিষয়ে আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুল ইসলাম আরিফ বলেন, সন্ধ্যায় কয়েকটি বাস কাউন্টারে হামলা চালিয়ে তালা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে তালা খুলে দেয়। যারা আগে ছিলেন তারাই এখন কাউন্টারে আছেন। হামলার শিকার ভুক্তভোগীদের অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আব্দুল আলীম/এফআরএস