এখনো জলাবদ্ধ শ্রীপুরের ১৫ পরিবার, বাড়ছে পানিবাহিত রোগ
বর্ষাকাল বিদায় নিয়ে শীতের আবহ শুরু হলেও মাগুরার শ্রীপুর সদরের নতুন বাজার এলাকা এখনো জলাবদ্ধ। এতে স্বাভাবিক জীবনযাপন ব্যাহত হয়ে ভোগান্তিতে পড়েছে ওই এলাকার অন্তত ১৫টি পরিবার।
জানা যায়, সামান্য বৃষ্টি হলেই এই এলাকায় জমে হাঁটুসমান পানি। ভারী বর্ষণে পোহাতে হয় সীমাহীন দুর্ভোগ। জলাবদ্ধতার কারণে বেড়েছে মশা-মাছির প্রকোপ, সেইসঙ্গে বাড়ছে পানিবাহিত রোগ।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত দুই মাস আগে হওয়া অতি বৃষ্টিতে নতুন বাজার এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। বাজারের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা গলে-পচে যাওয়া ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে পানিতে, তা থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। চলাচলের সময় তাই মানুষ নাক ঢেকে এসব স্থান পার হতে হচ্ছে। এ ছাড়া দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। একই সঙ্গে পানিবাহিত বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও দেখা দিয়েছে।
বাজারের পার্শ্ববর্তী বাসিন্দা নাহার বেগম বলেন, জমি কিনে বাড়ি করেছি। এখানে একটু বৃষ্টি হলেই চারপাশের পানি গড়িয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। পানি আটকে থাকায় মশার উপদ্রব বেড়েছে, ডেঙ্গুজ্বর হতে পারে এ আতঙ্কে আছি। সরকারের পক্ষ থেকে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিলে আমাদের খুব সুবিধা হতো।
অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ইউনুস আলী বলেন, চার শতক জায়গা কিনে এখানে বাড়ি করেছি। বাড়ি করার পর থেকেই দেখছি চারপাশে পানি, মাছ বাজারের পানি, পার্শ্ববর্তী পাড়ার পানি গড়িয়ে এখানে এসে জলাবদ্ধতা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ময়লা-আবর্জনা পচে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এক সময় পানি যাওয়ার জন্য নালা ছিল কিন্তু জগদীস নাম করে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করে সেই নালা বন্ধ করে দেন। যার কারণে পানি বের হতে পারে না। বর্তমানে আমাদের এখানে বসবাস করা খুবই দুষ্কর হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে পানি নিষ্কাশনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে আমরা উপকৃত হতাম।
পশ্চিম পাড়ার বাসিন্দা ফারুক আহম্মেদ বলেন, আমরা নতুন বাজারের পাশে দীর্ঘদিন বসবাস করছি। আশপাশে পাল সম্প্রদায়ের মানুষসহ বিভিন্ন জায়গায় থেকে মানুষ এসে জায়গা কিনে বাড়ি করেছে। আমরা একসঙ্গে বসবাস করি। দুই মাস আগে অতিবৃষ্টিতে নতুন বাজারে মাছের আড়তের পানি আমাদের বাড়ির চারপাশে এসে রাস্তায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। অধিকাংশ মানুষের বাড়ির টিউবওয়েলের পানিতে দুর্গন্ধ, ছোট বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। আমরা খুব দুরবস্থায় আছি। এমতাবস্থায় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। পানি নিষ্কাশনের জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমরা পরিবার নিয়ে খুব সুন্দরভাবে বসবাস করতে চাই।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) রাখী ব্যানার্জি বলেন, এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে একটা আবেদন পেয়েছি। বিষয়টা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তাছিন জামান/এএমকে