কোন দলকে নিষিদ্ধ না করে যারা অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত তাদের শাস্তি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি কর্পোরেশনর সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা।

তিনি বলেন, জাতীয় পার্টি কোনো দলকে নিষিদ্ধের পক্ষে নয়। অন্যায়ের সঙ্গে জড়িত সেটা জাতীয় পার্টি, আওয়ামী লীগ বা বিএনপি যেই হোক না কেন, তাদের অপরাধের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক। কিন্তু যারা অপরাধ করেনি, দোষী না, তাদের রাজনীতি থেকে বিরত রাখার পক্ষে আমরা নই। কোনো দলকে নিষিদ্ধ করে বাইরে রাখা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের জন্য অন্তরায়।

বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডস্থ জাতীয় পার্টির কার্যালয়ে রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি সভার আগে সাংবাদিকদের সঙ্গে ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা বলেন, জাতীয় পার্টি ছাড়া নির্বাচন হলে তা অংশগ্রহণমূলক হবে না। জাতীয় পার্টি একটি বৃহৎ রাজনৈতিক দল।

আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের ব্যাপারে করা এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক মেয়র বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের কথা উঠেছে। কিন্তু জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের কথা এখনো ওঠেনি। যখন উঠবে তখন দেখা যাবে। রাজনৈতিক দল সংস্কার হতে পারে। সংস্কার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আবারও ফিরতে পারে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের সবাই তো খারাপ নয়, আওয়ামী লীগের মধ্যে ভালো রাজনীতিবিদও আছেন।

নির্বাচন প্রসঙ্গে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন অতিবাহিত হলেও তারা নির্বাচনের কোনো রোডম্যাপ দিতে পারেনি। এক্ষেত্রে তারা ব্যর্থ। কেননা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান কাজ হচ্ছে একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন দেওয়া। ১৭ বছর ধরে যার অপেক্ষায় আছে দেশের মানুষ। অথচ তারা একেক সময় একেক কথা বলছেন, যার কারণে মানুষের মনে নানা বিষয়ে সন্দেহের দানা বাঁধছে।

মোস্তাফিজার রহমান আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস অত্যন্ত উঁচু মানের মানুষ। কিন্তু উনি তো কোনো রাজনীতি করেননি, দেশ পরিচালনা করেননি। এজন্য দেশ পরিচালনায় অনেক ঘাটতি দেখা যাচ্ছে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কিছুটা উন্নতি হলেও অন্যান্য সব সেক্টরেই সমস্যা। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলার ক্ষেত্রে পুলিশ একেবারে নিষ্ক্রিয়। পুলিশ সক্রিয় না হলে নির্বাচন কীভাবে হবে? পুলিশের কাজ তো আর্মি দিয়ে হবে না। কেননা ভোটকেন্দ্র পুলিশ ছাড়া কে পাহারা দেবে? তাই পুলিশকে সক্রিয় করতে হবে সবার আগে।

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা সংলাপে জাতীয় পার্টিকে না ডাকা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সংলাপে কে ডাকল, কে ডাকল না, সেটা বিষয় না। জাতীয় পার্টি নিজেদের শক্তি সামর্থ্য বাড়াতে দলকে সুসংগঠিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।

রংপুর বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও রংপুর মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক এস এম ইয়াসীর, জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব ও জেলা জাতীয় পার্টির সদস্যসচিব হাজী আব্দুর রাজ্জাক, পার্টির অতিরিক্ত মহাসচিব ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারীসহ বিভাগের ৮ জেলার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমজেইউ