দুদকের মামলায় মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার কারাগারে
পুলিশ কনস্টেবল নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদারকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর এ আদেশ দেন।
দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. আকতারুজ্জামান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এই মামলায় বাকি চার আসামি জামিনে আছেন, আর একজন পলাতক।
বিজ্ঞাপন
দুদক সূত্র জানায়, ২০১৯ সালের ২৮ মে পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে পুলিশ হেডকোয়াটার্স। পরে ওই বছরের ২৬ জুন ৩১ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারীকে কনস্টেবল পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর মধ্যে ২৪ জুন থেকে ২৬ জুন কয়েক ধাপে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে গচ্ছিত অবস্থায় ৭৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা উদ্ধার করে পুলিশ হেড হেডকোয়াটার্সের একটি বিশেষ দল। পরে অনুসন্ধানে পুলিশ হেড কোয়াটার্স জানতে পারে উদ্ধারকৃত টাকা পুলিশে চাকরিপ্রত্যাশীদের কাছ থেকে নেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় পুলিশ সদর দপ্তরের সুপারিশে ২০২৩ সালের ৫ জুলাই দুদকের মাদারীপুর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম।
মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার, সাবেক কনস্টেবল নুরুজ্জামান সুমন, সাবেক কনস্টেবল জাহিদুল ইসলাম, সাবেক টিএসআই গোলাম রহমান, পুলিশ হাসপাতালের সাবেক মেডিকেল সহকারী পিয়াস বালা ও মাদারীপুর সদর উপজেলার ঘটমাঝি গ্রামের মৃত সফিউদ্দিন ফরাজীর ছেলে হায়দার ফরাজীকে আসামি করা হয়। পরে চলতি বছরের ১১ জুলাই সাবেক পুলিশ সুপারসহ ৫ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে দুদক। এ ছাড়া ঘটনায় জড়িত না থাকায় হায়দার ফরাজী নামে এক আসামিকে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে সুপারিশ করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান।
প্রসঙ্গত, মাদারীপুরের সাবেক পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার সবশেষ রাজশাহী সারদা পুলিশ একাডেমিতে কর্মরত ছিলেন। এর আগে তিনি রংপুর রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে সংযুক্ত ছিলেন। অপরদিকে কনস্টেবল নুরুজ্জামান সুমন, জাহিদুল ইসলাম, গোলাম রহমান বরখাস্ত আর পিয়াস বালা চাকরিচ্যুত।
জানা যায়, পুলিশের নিয়োগ কমিটির তিন সদস্যদের মধ্যে সভাপতি ও প্রধান ছিলেন মাদারীপুরের তৎকালীন পুলিশ সুপার সুব্রত কুমার হালদার। এ ছাড়া বাকি সদস্য ছিলেন মাদারীপুরের তৎকালীন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নাজমুল ইসলাম ও গোপালগঞ্জের সাবেক সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহ আল মাসুদ।
মাদারীপুর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আকতারুজ্জামান বলেন, প্রধান আসামি সুব্রত কুমার হালদার উচ্চ আদালত থেকে জামিনে ছিলেন। তিনি মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের স্থায়ী জামিনের জন্য আবেদন করেন। পরে আদালত শুনানি শেষে আসামির জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশনা দেন। এ মামলায় অন্য আসামিরা কারাভোগ শেষে নিম্ন আদালত থেকে জামিনে রয়েছেন।
দুদকের আইনজীবী মো. আনিসুর রহমান বলেন, সুব্রত কুমার হালদার আজ স্বেচ্ছায় আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে তীব্র আপত্তি জানানো হয়। পরে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। সুব্রত কুমার বিরুদ্ধে দুদক স্পষ্টভাবে দুর্নীতি প্রমাণ পাওয়ায় অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেছে।
এমজেইউ