বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম বলেন, ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা প্রশাসনকে অপব্যবহার করে যে কাজগুলো করেছে এর ফল কি হতে পারে তা ১৬ বছর পর স্বচক্ষে দেখিয়েছে। যেই নেতাকর্মীরা তার ওপর এত ভরসা করত তাদেরকে খোলা মাঠে রেখে ভয়ে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।

শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) রাতে পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার মির্জা গোলাম হাফিজ ডিগ্রি কলেজ মাঠে আয়োজিত মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

সারজিস বলেন, যারা ভালো, ভালো কাজ করেছে, কোনো অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না তারা যে দলেরই হোক তাদের সঙ্গে যেন নতুন করে অন্যায় না হয়। আগামীতে যারা ক্ষমতায় আসবে তারা যদি একই কাজ করে তাহলে এক দলের সঙ্গে আরেক দলের কামড়াকামড়ি যাবে না। সুস্থ রাজনৈতিক চর্চা সেটা কোনোদিন স্টাবলিস হবে না। এখানে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা আছে। এই শিক্ষাটা আমাদের নিতে হবে। এই একই কাজ যেন এখন থেকে আমরা না করি।

সারজিস আরও বলেন, আমরা দেখেছি বিগত ১৬ বছরে আওয়ামী লীগ কিভাবে বিএনপি-জামায়াতসহ অন্য দলের নেতাকর্মীদের নামে মিথ্যে মামলা দিয়েছে। গুম, খুন ও নির্যাতন করেছে। হাসিনার কোনো দোসর যদি বিগত সময়ে অন্যায়, অত্যাচার ও অপকর্ম করে থাকে তাদের আইনগতভাবে যে শাস্তি হওয়া দরকার সেটিই যেন হয়। একইভাবে কোনো নির্দোষ মানুষ কোনোভাবে যেন অন্যায়ের শিকার না হয়। রিভেঞ্জ অব ন্যাচার বলে একটা জিনিস আছে। যেটা শেখ হাসিনা এখন পাচ্ছে।

তিনি বলেন, কেউ একজন অন্য দল করে বলে সে আমার শত্রু এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসতে হবে। ভালো কাজ করলে সে যে দলেরই হোক তার সুনাম করব। কারো কাজ খারাপ হলে তার সমালোচনা করব সে যে দলেরই হোক। উত্তরবঙ্গের মানুষ ভালো, মন মানসিকতা ভালো। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে সামান্য কিছুতেই আমাদের মধ্যে প্রচুর মনোমালিন্য প্রচুর বিভাজন। এই জিনিসটা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে। আমরা মনে করি আমাদের পারস্পরিক যে শ্রদ্ধাবোধ সেটি থাকা উচিত।

সারজিস বলেন, মাসব্যাপী ঐতিহ্যবাহী রাসমেলাটি চিত্ত বিনোদনের একটা জায়গা হোক। কিন্তু মেলার কোনো একটি উপকরণ যেন তরুণ সমাজকে বিপথে না নেয় এবং বিপথে নিতে প্ররোচিত না করে। এমন উপকরণ থাকা যাবে না। আর মাদকের সঙ্গে যারাই যুক্ত থাকবে, তার পেছনে যেই থাকুন না কেন, সে যত বড়ই কিছুই হোক না কেন, যেই পদধারী হোক না কেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সাবেত আলী, পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান মুন্সীসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও মেলা কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এসকে দোয়েল/আরকে