সিরাজগঞ্জ-ঢাকা-সিরাজগঞ্জ রুটে চলাচলকারী সিরাজগঞ্জ শহর থেকে ঢাকাগামী একমাত্র ট্রেন সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস তিন মাস ১০ দিন পর আজ থেকে আবার চালু হয়েছে। শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৬টায় সিরাজগঞ্জ বাজার স্টেশন থেকে ট্রেনটি যাত্রী নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।

দীর্ঘদিন পর ট্রেনটি চালু হওয়ায় যাত্রীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছিল। ট্রেন পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে অবদান রাখা বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু এ সময় যাত্রীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। সেখানে বিএনপির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

পুনরায় ট্রেন চালু হওয়ায় উচ্ছ্বসিত যাত্রীরা। তারা বলেন, জেলা শহর থেকে চলাচল করা একমাত্র ট্রেনটি বন্ধ হওয়ার ফলে ঢাকায় যাতায়াত করতে অনেক ভোগান্তির শিকার হতে হতো। দীর্ঘদিন পর ট্রেনটি চালু হওয়ায় ভোগান্তি কমলো। এখন থেকে আবার সকালের ট্রেনে ঢাকায় গিয়ে কাজ শেষ করে বিকেলের এই ট্রেনেই ফেরা যাবে। পাশাপাশি আন্তঃনগর এ ট্রেনটি যেন লোকালের মতো চলাচল না করে সেই দাবিও জানান যাত্রীরা।

এর আগে গত ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ রেলওয়ের জেনারেল ম্যানেজার (পশ্চিম)-এর পক্ষে  ডেপুটি চিফ অপারেটিং সুপারিন্টেন্ডেন্ট (পশ্চিম) মোসা. হাসিনা খাতুন স্বাক্ষরিত এক পত্রে ট্রেন পুনরায় চালুকরণের নির্দেশনা দেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে সাইদুর রহমান বাচ্চু ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ৫ আগস্টের পর থেকেই এই ট্রেনটি পুনরায় চালুর জন্য সর্বস্তরের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন করে আসছি। এই আন্দোলনে থাকা এবং ট্রেন চালুর পেছনে কাজ করা প্রত্যেককে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।

তিনি আরও বলেন, আমি ট্রেন চালুর দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছি, সকল শ্রেণি-পেশার মানুষদের নিয়ে মানববন্ধন করেছি, স্মারকলিপি দিয়েছি। সচিবের সঙ্গে দেখা করে অনুরোধ করেছি। অবশেষে সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু হয়েছে, এই অর্জন সিরাজগঞ্জবাসীর। তবে আমি দাবি করেছিলাম, ট্রেনে এসি বগি সংযুক্ত করতে এবং এক্সপ্রেস ট্রেন লোকালের মতো না চলে এক্সপ্রেসের মতোই চলবে। আমার আরও দাবি থাকবে, যমুনা রেলসেতু চালু হওয়ার পরে উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করা ট্রেনগুলো যেন সিরাজগঞ্জ শহর হয়ে চলাচল করে। এতে শিল্পাঞ্চলে পরিণত হতে যাওয়া সিরাজগঞ্জের মানুষ অনেক উপকৃত হবে।

প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন চলাকালে গত ৪ আগস্ট সিরাজগঞ্জ শহরের বাজার স্টেশন ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমপাড়ে অবস্থিত শহীদ এম. মনসুর আলী স্টেশন দুটি ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগ করা হয়। এরপর থেকে স্টেশন দুটির কার্যক্রম এবং সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি বন্ধ করে দেয় পশ্চিমাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।

এরপর থেকে স্টেশন দুটি মেরামত ও ট্রেন পুনরায় চালুর দাবিতে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীদের নিয়ে স্মারকলিপি প্রদান, সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বাচ্চু। এতে সহযোগিতা করেন সিরাজগঞ্জের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ।

শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ