কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় জয়কৃষ্ণ বর্মনের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের মামলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়াকে (৪০) ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। 

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) রাতে তার গেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ র‍্যাব-১৪-এর সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই চৌধুরী।

গ্রেপ্তার ইদ্রিস মিয়া কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার রশিদাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি ওই ইউনিয়নের ব্রাহ্মণ কচুরী গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।

র‌্যাব-১৪ সিপিসি-২, কিশোরগঞ্জ ক্যাম্পের একটি অভিযানিক দল, র‌্যাব-২ সিপিসি-৩ আগারগাঁওয়ের সহায়তায় রাজধানীর কারওয়ান বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সহকারী পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হাই চৌধুরী বলেন, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পরপরই বিএনপি সমর্থিত স্থানীয় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ইদ্রিসের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১৫ জন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সদর উপজেলার ব্রাহ্মণকচুরী গ্রামের প্রয়াত জয়কৃষ্ণ বর্মনের স্ত্রী গীতা রানী বর্মণের (৬৫) বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করে সব মালামালসহ ঘরের দরজা-জানালা খুলে নিয়ে যায়। তখন ওই পরিবারের সদস্যদেরও এলাকা ছাড়া করে হামলাকারীরা।

এ ঘটনায় সাবেক চেয়ারম্যান ইদ্রিস মিয়াসহ ১০ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও ৫০ জনের বিরুদ্ধে গত ২৩ সেপ্টেম্বর কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী গীতা রানী বর্মণ। এ ছাড়া জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। সেই সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল তার পরিবার। এরপর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হামলাকারীরা হুমকি দিতে থাকে।

মামলার বাদী গীতা রানী বর্মণের ভাই প্রদীপ বর্মণ জানান, যাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সে মামলার ১ নম্বর আসামি। তার নেতৃত্বেই হামলা লুটপাট হয়েছে। এছাড়া ১ নং আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার বিষয়টা কিছুটা স্বস্তি। এই ঘটনার প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমরা হতাশ ছিলাম। কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আমরা সঠিক বিচার পাবো।

প্রসঙ্গত, দলীয় সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত ১ অক্টোবর ইদ্রিস মিয়াকে দল থেকে বহিষ্কার করে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি। এ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আশফাক আহমেদ জুন জানান, ইদ্রিস মিয়া বিরুদ্ধে এক হিন্দু পরিবার অভিযোগ করলে আমরা দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাকে বহিষ্কার করি। কারণ কেউ যেন দলীয় প্রভাব কাটিয়ে কোন অনিয়ম করতে না পারে। এ বিষয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান কঠোর অবস্থানে রয়েছেন সামান্য অনিয়মের কোনো ছাড় নেই। কেউ যেন দলের নাম ভাঙিয়ে কোনো অসামাজিক কাজ করতে না পারে সে বিষয়ে দল থেকে কঠোর নির্দেশনা রয়েছে।

এনামুল হক হৃদয়/এমএ