সত্তরের ঘূর্ণিঝড়ে নিহতদের স্মরণে কুয়াকাটায় মোমবাতি প্রজ্বালন
১৯৭০ সালের ১২ নভেম্বর রাতে উপকূলে আঘাত হানে প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়। বিভিন্ন ক্ষয়-ক্ষতির পাশাপাশি লাখো মানুষের প্রাণ কেড়ে নেয় ওই ঘূর্ণিঝড়। এই দিনটিকে উপকূল দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্তরা। দিনটিকে স্মরণ করে কুয়াকাটা প্রেসক্লাব মাঠে মোমবাতি প্রজ্বালনের আয়োজন করা হয়।
মঙ্গলবার( ১২ নভেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় কুয়াকাটা প্রেসক্লাব এ কর্মসূচির আয়োজন করে। এ সময় কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সদস্যদের পাশাপাশি মোমবাতি প্রজ্বালনে যোগ দেয় কুয়াকাটার অনেক সাধারণ মানুষ ও পর্যটকরা।
বিজ্ঞাপন
জানা যায়, ভয়াল এই দিনের কথা স্মরণ করতে গেলে আজও আঁতকে ওঠে কলাপাড়া উপকূলের মানুষ। সরকারি হিসেবে বৃহত্তর পটুয়াখালী জেলায় (বরগুনাসহ) সেদিন রাতে ৪৮ হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। বাস্তবে এ সংখ্যা লাখেরও বেশি। বর্তমান রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ, সোনার চর, মৌডুবি, বড় বাইশদিয়াসহ দ্বীপ সমৃদ্ধ জনপদ পরিণত হয় জনশূন্য বিরান ভূমিতে। মানুষ ছাড়া ঘর-বাড়ি-ফসলসহ সম্পদহানি হয় শত কোটি টাকার। সমস্ত খালবিল নদী নালায় ছিল লাশের মিছিল। এখনো ভয়াল সেই রাতের কথা স্মরণে এলে শিউরে ওঠে রাঙ্গাবালী, গলাচিপা ও কলাপাড়ার মানুষ।
ঢাকা থেকে কুয়াকাটায় বেড়াতে আসা পর্যটক মজিবুর রহমান বলেন, উপকূলের মানুষ সব সময়ই ঝড়-বন্যার সাথে মোকাবিলা করে বেঁচে থাকে। আমারা প্রতিবছরই দেখি ৫ থেকে ৭ বার উপকূলে ঘূর্ণিঝড় হয়। এসব ঘূর্ণিঝড় সরাসরি আঘাত না হানলেও উপকূলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়। আর ১৯৭০ সালের প্রলয়ংকরী এই ঘূর্ণিঝড়ের ইতিহাস ছোটবেলা থেকেই শুনে এসেছি। আমরা উপকূলে বসবাস না করলেও উপকূলের মানুষের জন্য আমাদের অনেক ভালোবাসা থাকে। আজকে কুয়াকাটায় বেড়াতে এসে মোমবাতি প্রজ্বালন দেখে আমিও এ আয়োজনে অংশগ্রহণ করি। ১৯৭০ সালে নিহতদের প্রতি রইল বিনম্র শ্রদ্ধা।
কুয়াকাটা প্রেসক্লাবের সভাপতি রুমান ইমতিয়াজ তুষার বলেন,১৯৭০ সালে ঘটে যাওয়া প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্ক এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে উপকূলের প্রবীণ অনেক মানুষ। এজন্য প্রতিবছর এই দিনে মোমবাতি প্রজ্বালনের মাধ্যমে নিহতদের স্মরণ করি। ১২ নভেম্বর উপকূল দিবস ঘোষণার দাবি উপকূলের সাধারণ মানুষের।
এসএম আলমাস/আরএআর