রংপুর নগরীর দমদমা এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ ও ইউটার্ন (লেন পরিবর্তন) নেওয়ার ব্যবস্থা রাখার দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসীসহ শিক্ষার্থীরা। ঘণ্টাব্যাপী এই বিক্ষোভে ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের ওই স্থান দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এতে উভয় পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়।

মঙ্গলবার (১২ নভেম্বর) দুপুরে রংপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (আরটিটিসি) সামনে রংপুর-ঢাকা মহাসড়কে নিরাপদ চলাচল নিশ্চিতে এই সড়ক অবরোধ করা হয়। এতে করে রাস্তার দুই পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়।

সমাবেশে শিক্ষার্থীরা জানান, চলতি সপ্তাহে টিটিসির এক প্রশিক্ষণার্থী রাস্তায় চলাচলের সময় বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন। পরে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে ওই শিক্ষার্থী হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। উত্তরাঞ্চল থেকে ঢাকাগামী একমাত্র সড়ক হওয়ায় সার্বক্ষণিক এ মহাসড়কটিতে ভারী যানবাহন চলাচল করে। ফলে রাস্তা পারাপার হতে গিয়ে যেকোনো সময় প্রাণহানির মত ঘটনা ঘটতে পারে। তাই ধর্মদাস তামপাট এলাকার বাসিন্দা, কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র-টিটিসির প্রশিক্ষণার্থীসহ সাধারণ জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে ফুটওভার ব্রিজ ও ইউটার্ন নির্মাণ অতীব প্রয়োজন হয়ে দাড়িয়েছে।

মানববন্ধন সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- শিক্ষার্থী আল আমিন, মফিজুল ইসলাম, সোহানুর রহমানসহ অন্যরা। পরে পুলিশ কর্মকর্তা এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তাদের আশ্বাসে এক ঘণ্টা পর সড়ক অবরোধ তুলে নেন আন্দোলনকারীরা।

পুলিশ ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, রংপুরের দমদমা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের শিক্ষার্থীরা ওই এলাকায় চার লেনের ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে লেন পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু কার্যকরী কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ কারণে তারা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন।

সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশের রংপুর রেঞ্জের অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ আলমগীর হোসেন, রংপুর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) নাজমুল হক ও সাসেক সড়ক সংযোগ-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাসিদ হাসান উপস্থিত হন। এ বিষয়ে তারা জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। পরে দুপুর পৌনে ১২টার দিকে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ প্রত্যাহার করেন।

রংপুরের তাজহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ আলম সরদার জানান, উপস্থিত সাসেক কর্মকর্তা আগামীকাল বুধবার (১৩ নভেম্বর) সড়ক ও জনপথের কর্মকর্তারা আরটিটিসির অধ্যক্ষের সঙ্গে সমস্যা সমাধানে বসবেন। এই আশ্বাসে শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী অবরোধ তুলে নেন।

সাসেক-২ প্রকল্পের উপ-প্রকল্প ব্যবস্থাপক নাসিদ হাসান বলেন, শিক্ষার্থীদের অবরোধের বিষয়টি তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাবেন।

হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি জাকারিয়া ইসলাম বলেন, মহাসড়কে যে কোনো স্থাপনা নতুন করে সংযোজন করতে হলে প্রকল্পের পরিচালকের সঙ্গে কথা বলতে হবে। সেই সঙ্গে মহাসড়ক নির্মাণের নকশা সংযোজন করা একটি জটিল বিষয়। আন্দোলনকারীদের দাবি সড়ক ও জনপথ বিভাগের কর্মকর্তারা শুনেছেন। যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে তারা সড়ক অবরোধ তুলে নিয়েছেন।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এফআরএস