উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় এক ব্যবসায়ীকে দোকান থেকে তুলে এনে নিজের অফিস কক্ষে পেটানোর অভিযোগে ডামুড্যা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) আবু বকর সিদ্দিককে কিশোরগঞ্জে বদলি করা হয়েছে।

সোমবার (১১ নভেম্বর) ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ের সিনিয়র সহকারী কমিশনার মাশিয়া তুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক আদেশে তাকে কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) অফিসে বদলি করা হয়।

জানা গেছে, ভুক্তভোগী কাপড় ব্যবসায়ী সোলাইমান ফরাজীকে মারধর ও লাঞ্ছিত করার অভিযোগ তুলে ডামুড্যা উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি (এসিল্যান্ড) আবু বকর সিদ্দিকের বিরুদ্ধে  বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন ব্যবসায়ী সোলাইমান ফরাজী। এরপর ঢাকা বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয় থেকে শরীয়তপুর জেলা প্রশাসককে বিষয়টি তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। গত বুধবার (০৬ নভেম্বর) অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পিংকি সাহাকে তদন্তের জন্য দায়িত্ব দিয়ে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্তের প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেয় জেলা প্রশাসক।

ভুক্তভোগী সোলাইমান ফরাজী ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়নের মডেরহাট বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ও চর ধানকাঠি এলাকার বাসিন্দা। গত বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে বাজারে অভিযান পরিচালনা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচারক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক। এ সময় তিনি সোলাইমান ফরাজীর কাছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ট্রেড লাইসেন্স চাইলে তিনি প্রথমে ফটোকপি ও পরবর্তীতে মূল কপি দেখান। এরপর তার কাছে আয়কর সার্টিফিকেট চাইলে সেটি তিনি দেখাতে পারেননি। পরে তাকে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে ১ হাজার ১০০ টাকা জরিমানা করা হয়।

তবে ক্ষুদ্র দোকানি হওয়ায় জরিমানার টাকা দেওয়া নিয়ে সোলাইমান ফরাজীর সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয় এসিল্যান্ড আবু বকর সিদ্দিকের। এক পর্যায়ে ক্ষিপ্ত হয়ে আনসার সদস্যদের দিয়ে তাকে গাড়িতে উঠিয়ে নিজ কার্যালয়ে নিয়ে আসেন সহকারী কমিশনার (ভূমি) আবু বকর সিদ্দিক। সেখান আটকে রেখে প্রথমে তাকে কানে ধরে উঠবস ও পরবর্তীতে আনসার ও তিনি নিজে তাকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন বলে অভিযোগ করেন সোলাইমান। খবর পেয়ে ডামুড্যা উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মাওলানা সাইফুল ইসলাম ও পৌর জামায়াতের আমির আতিকুর রহমান কবির ঘটনাস্থলে গেলে তাদের অনুরোধে ২ হাজার টাকা জরিমানা করে ছেড়ে দেওয়া হয় সোলাইমানকে। এরপর সোলায়মান বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (উন্নয়ন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) পিংকি সাহা ঢাকা পোস্টকে বলেন, তদন্তকালীন সময়ে অভিযোগটি স্থানীয়ভাবে মীমাংসা হয়েছে। অভিযোগকারী তার অভিযোগ প্রত্যাহার করেছেন। এছাড়াও গতকাল সকালেই বিভাগীয় কমিশনার অফিস অভিযুক্ত কর্মকর্তাকে ইতোমধ্যে বদলি করে দিয়েছেন।

সাইফ রুদাদ/এফআরএস