মাদারীপুর জেলার শিবচরে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে হিরু মাতুব্বর (৩৫) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন।

সোমবার(১১ নভেম্বর) শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি চকেরবাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত হিরু একই এলাকার এসকেন্দার মাতুব্বরের ছেলে। তিনি পেশায় একজন রাজমিস্ত্রী ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের খাড়াকান্দি গ্রামে বিএনপির রাজনীতিকে ঘিরে দুটি গ্রুপ তৈরি হয়েছে। এই দুই গ্রুপ নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোববার (১০ নভেম্বর) রাতে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এসময় আহত হয় ৮ জন। ওই ঘটনার জের ধরে সোমবার দুপুরে ফের সংঘর্ষ হলে একজনের মৃত্যু হয়।

এলাকাবাসীরা জানায়, এলাকায় ফরাজি, মোল্লা এবং মাতুব্বর এই তিনটি গোষ্ঠী বেশ শক্তিশালী। আওয়ামী লীগের শাসনামলে মাতুব্বর ও ফরাজী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত ছিল। অন্যদিকে মোল্লাগ্রুপ বিএনপির সমর্থক। এদিকে ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বিএনপির দুটি গ্রুপ তৈরি হয়। এর মধ্যে শাহাদাত হোসেন একটি এবং মালেক মোল্লা আরেক গ্রুপের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যেই স্থানীয় মাতুব্বর ও ফরাজী গোষ্ঠীর লোকজনের সমর্থন রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, মূলত নিজেদের আধিপত্য জানান দিতেই রোববার বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষ বাঁধে। একই সূত্র ধরেই সোমবার মার্ডার হলো। এখানে দলীয় রাজনীতির চেয়ে স্থানীয় গ্রাম্য রাজনীতির ভূমিকাই বেশি।

নিহতের স্ত্রী রোজিনা বলেন, ‘ঘরের বাইরে বের হতেই আমার স্বামীকে কুপিয়ে পাশের পুকুরে ফেলে যায়। আমরা পুকুর থেকে তুলে আনতেই দেখি তিনি আর নাই। টুকু ফরাজির লোকজন আমার স্বামীরে মাইরা ফেলছে।’

শিবচর থানার ওসি মোকতার হোসেন বলেন, দত্তপাড়া খাড়াকান্দি এলাকার দুই দল নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে রোববার রাতে সংঘর্ষে বাঁধে। এসময় আহত হয় কমপক্ষে ৮ জন। ওই জের ধরেই সোমবার দুপুরে ফের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় হিরু মাতুব্বর নামে একজনের মৃত্যু হয়।

তিনি আরও বলেন, খবর পেয়ে শিবচর থানা পুলিশ, সেনাবাহিনীর টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশি অভিযান চলছে।

এসএম