গাজীপুর মহানগরীর মালেকের বাড়ি এলাকার টিএনজেড গ্রুপের শ্রমিকরা বকেয়া বেতনের দাবিতে টানা ৩৬ ঘণ্টা ধরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করছেন। গতকাল শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল ৯টা থেকে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থান করছেন। 

শ্রমিকরা জানিয়েছেন, কারখানা কর্তৃপক্ষ একাধিকবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে বেতন পরিশোধের আশ্বাস দিলেও তা করেনি। এখন তারা বেতন ছাড়া ঘরে ফিরবেন না, মহাসড়কও ছাড়বেন না। 

রোববার (১০ নভেম্বর) রাত ৯টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্তও শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান করছেন। 

টানা আন্দোলনে অংশ নিয়েছেন রমজান আলী নামে টিএনজেড গ্রুপের এক শ্রমিক। তিনি বলেন, আমরা একাধিকবার আশ্বাস পেয়েছি। কিন্তু আশ্বাসের প্রেক্ষিত্রে বেতন পাইনি। আমরা আশ্বাস দিয়ে কী করব। আমাদের বেতন দরকার। আমাদের ঘর ভাড়া বাকি পড়ে আছে। বেতন পেলে ঘর ভাড়া দেব, কিন্তু বাড়ির মালিক তা মানতে নারাজ।

অপর শ্রমিক কবির মিয়া বলেন, আমরা স্থানীয় মুদির দোকান থেকে মাসিক হারে বাকি খাই। বেতন পাওয়ার পরপরই ঘর ভাড়া ও দোকান বাকি পরিশোধ করতে হয়। দুই মাসের বেতন বকেয়া থাকায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে। বেতনের একটি অংশ গ্রামের বাড়িতে মা-বাবার কাছে পাঠাতে হয়। তাদের কাছে টাকা না পাঠাতে পারায় তারাও কষ্টে আছে। আমাদের কষ্ট কেউ বুঝে না।

এদিকে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখায় কয়েক কিলোমিটার এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। ময়মনসিংহগামী ও ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী দূরপাল্লার পরিবহন কম চলাচল করছে। গাজীপুর থেকে ঢাকা, ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল ও কিশোরগঞ্জসহ উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা বিকল্প সড়ক ব্যবহার করছেন।

একটি বেসরকারি ব্যাংকের অফিস সহকারী রাহুল বলেন, খুব ভোরে ব্যাংকটির প্রধান কার্যালয়ের উদ্দেশে গাজীপুর থেকে রওনা হই। স্বল্প দূরত্বের যানে ভেঙে ভেঙে ঢাকায় প্রবেশ করি। সেখানে কাজ শেষে একইভাবে গাজীপুর ফিরতে হয়েছে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (ট্রাফিক) ইব্রাহিম খান বলেন, আমরা শ্রমিকদের মহাসড়ক ছেড়ে দেওয়ার জন্য একাধিকবার অনুরোধ করেছি। কিন্তু তারা বলছেন বেতন না পেলে মহাসড়ক ছাড়বেন না। রোববার রাত ৯টা পর্যন্ত শ্রমিকরা মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা ঢাকাগামী যানবাহনগুলোকে ভোগড়া থেকে ডাইভারসন দিচ্ছি। ঢাকা বাইপাস হয়ে, কাঞ্চন ব্রিজ হয়ে বা তিনশ ফিট হয়ে যাতে ঢাকায় যেতে পারে। অপরদিকে ঢাকা থেকে যেগুলো ময়মনসিংহমুখী গাড়িগুলো সেগুলো স্টেশন রোড হয়ে মিরের বাজার হয়ে ওদিক দিয়ে ঢাকা বাইপাস হয়ে আসতে পারে। অতিরিক্ত গাড়ির চাপ থাকায় দুই দিকেই যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। আমরা তাদেরকে বুঝানোর চেষ্টা করছি।

শিহাব খান/আরএআর