গাজীপুর মহানগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেছেন টি এন জেড অ্যাপারেলস্ লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরা। এছাড়া বকেয়া বেতন প্রদানসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন বোর্ডবাজার ও কোনাবাড়ীর দুটি কারখানার শ্রমিকরা।

শনিবার (৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টায় মহানগরের মালেকের বাড়ি এলাকায় বকেয়া বেতনের দাবিতে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন টি এন জেড অ্যাপারেলস্ লিমিটেডের শ্রমিকরা। এতে মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। অবরোধের কারণে কয়েক কিলোমিটার জুড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।

গাজীপুর শিল্পপুলিশ ও শ্রমিকরা জানান, শ্রমিকদের বেতন ভাতা না দিয়ে কর্তৃপক্ষ কারখানা বন্ধ রেখেছে। এই গ্রুপের ছয়টি কারখানার সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন বকেয়া আছে। সকালে শ্রমিকরা কারখানার সামনে আসেন। সেখান থেকে কলম্বিয়া মোড়ে গিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধ করেন। পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।

কারখানা শ্রমিক আলাল উদ্দিন বলেন, দুই মাস ধরে বেতন দিচ্ছি বললেও এখন পর্যন্ত বেতন-ভাতা পাইনি। বাধ্য হয়ে রাস্তায় নামতে হয়েছে।

রাবেয়া আক্তার নামে অপর এক শ্রমিক বলেন, এপ্রিল মাস থেকে কারখানা বন্ধ ছিল। সেপ্টেম্বর মাসে কারখানা খুললেও দুই মাসের বেতন না দিয়ে কর্তৃপক্ষ নানা তালবাহানা করছে। পুলিশ ও সেনাবাহিনীর মাধ্যমে বারবার বেতন পরিশোধের তারিখ দিলেও কারখানা কর্তৃপক্ষ শ্রমিকদের বেতন দিচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে সড়ক অবরোধ করতে হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খলিলুর রহমান বলেন, কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বেতন সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে।

অপরদিকে, বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়ার দাবি জানিয়ে গাজীপুর মহানগরের বোর্ড বাজারের এসএমএস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা কারখানার নিচে অবস্থান করছেন।

শ্রমিকরা জানান, কারখানা কর্তৃপক্ষ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসের বেতন পরিশোধ না করে গত ৬ নভেম্বর সাধারণ ছুটি ঘোষণা করে। আজ ৯ নভেম্বর কারখানা খুলে দেওয়ার কথা থাকলেও কর্তৃপক্ষ আজও কারখানা বন্ধ রেখেছে। বন্ধ কারখানা খুলে দেওয়া ও বকেয়া বেতনের দাবিতে ৩০-৩৫ জন শ্রমিক কারখানার নিচে অবস্থান করছেন।

এসএমএস ফ্যাশন ওয়্যার লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মালিক শফিকুল আলম বলেন, আগামী সোমবার সরকারের কলকারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একটি সভা আছে। সেখানে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাদের বেতনসহ অন্যান্য দাবি দ্রুত সময়ের মধ্যে পূরণ করা হবে।

এদিকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় বিসিক শিল্পনগরীর লাইফ ট্যাক্স লিমিটেড নামে একটি কারখানার শ্রমিকরা ৩৫ দফা দাবিতে কর্মবিরতি পালন করেন।

পুলিশ ও আন্দোলনরত শ্রমিকরা জানান, নামাজের বিরতি, টিফিন বিল, নাইট বিল, কারখানার ম্যানেজমেন্টের অপসারণসহ ৩৫ দফা দাবি জানিয়েছেন শ্রমিকরা। কর্তৃপক্ষ দাবি পূরণের আশ্বাস দিলে তারা সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চলে যান।

কোনাবাড়ী শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. মোরশেদ বলেন, লাইফ ট্যাক্স লিমিটেড শ্রমিক অসন্তোষের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিক ও মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। মালিকপক্ষ দ্রুত সময়ের মধ্যে শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে বিবেচনা করবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন।

শিহাব খান/এফআরএস