ফরিদপুর সদর উপজেলার কানাইপুরে গ্যারেজে থাকা একটি প্রাইভেটকার থেকে চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কানাইপুর ইউনিয়নের ভাটি কানাইপুর এলাকার একটি গ্যারেজে থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

মৃত ওই ব্যক্তির নাম শফিকুল ইসলাম ব্যাপারী (২৫)। তিনি কানাইপুর ইউনিয়নের মৃগী গ্রামের কুদ্দুস ব্যাপারীর ছেলে। শফিকুল এক বছর আগে বিয়ে করেছেন। তবে তার কোনো সন্তান ছিল না।

পুলিশ জানায়, শফিকুল ভাটি কানাইপুর এলাকার বাসিন্দা কৃষি উপকরণ বিক্রেতা ফরহাদ হোসেনের মালিকানাধীন ওই প্রাইভেটকারটির চালক ছিলেন। পাশাপাশি গাড়িটি রক্ষণাবেক্ষণও করতেন তিনি। নিজের বাড়িতে জায়গা না থাকায় গাড়িটি  ভাটি কানাইপুর গ্রামের কবির মোল্লার (৫৩) গ্যারেজে রাখতেন। প্রাইভেটকারটি কভার দিয়ে ঢাকা ছিল। ওই গাড়িতেই চালকের আসনে বসা অবস্থায় তার মরদেহ পাওয়া যায়।

কোতোয়ালি থানার পুলিশ আরও জানায়, বৃহস্পতিবার সকালে বাড়ি থেকে বের হন শফিকুল ইসলাম। রাত হয়ে গেলেও তিনি বাড়িতে না ফেরায় শফিকুলের বাবা কুদ্দুস ব্যাপারী গাড়ির মালিক ফরহাদকে জানান। গাড়ির মালিক ফরহাদ জানান, শফিকুল গাড়ি স্টার্ট দিয়ে ব্যাটারি গরম করার জন্য সকালে তার কাছ থেকে চাবি নিয়ে যান কিন্তু ফেরত দেয়নি। তখন গাড়ির মালিক ফরহাদ গ্যারেজের মালিক কবির মোল্লাকে ফোন করেন। কবির মোল্লা রাত ৯টার দিকে বাড়িতে ফিরে আসেন। তিনি তার গ্যারেজে রাখা প্রাইভেটকারটির কাছে গিয়ে দেখতে পান গাড়িটি কভার দিয়ে ঢাকা থাকলেও ভেতরে আলো জ্বলছে এবং চালকের আসন বরাবর কভারটি একটু উঠানো। তিনি গাড়ির কভার উঠিয়ে চালকের আসনে শফিকুলকে বসা ও মৃত অবস্থায় দেখতে পান। তখন তিনি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেনকে খবর দিলে ইউপি চেয়ারম্যান কোতোয়ালি থানার ওসিকে বিষয়টি জানান।

খবর পেয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদউজ্জামানসহ জেলা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) পুলিশ ঘটনাস্থলে যান।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি মো. আসাদউজ্জামান বলেন, মৃতের ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে একটি ক্ষত ছিল। সেই ক্ষত থেকে রক্ত ঝরে মৃতের পায়ের ওপর পড়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে শফিকুলের বৃদ্ধা আঙ্গুলে ক্ষত হওয়ার কারণে কোনোভাবে ব্যাটারির বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা যেতে পারেন। আজ শুক্রবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহটি ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে।

তবে শফিকুলের পরিবারের দাবি তাকে হত্যা করা হয়েছে। শফিকুলের মা নূরজাহান বেগম বলেন, আমার ছেলের কোনো বদঅভ্যাস ছিল না। তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ মৃত্যু মোটেও স্বাভাবিক নয়। আমরা এ হত্যার বিচার চাই।

কানাইপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আলতাফ হোসেন বলেন, শফিকুলের এ মৃত্যুর বিষয়টি রহস্যজনক। তবে পুলিশ তদন্ত করছে। একইসঙ্গে সিআইডিও কাজ করছে। বিভিন্ন উপাত্ত সংগ্রহ করেছে পুলিশ। তদন্তে এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটিত করার দাবি জানাচ্ছি।

জহির হোসেন/এমজেইউ