মানিকগঞ্জে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা মনিরুল ইসলাম মীমকে (২৬) কারাগারে নেওয়ার জন্য আদালত প্রাঙ্গণে প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় ডিম নিক্ষেপসহ গণপিটুনি দেওয়া হয়েছে। এতে বাধ্য হয়ে তাকে আবার আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যায় পুলিশ। পরে সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় মীমকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। এ সময় মীমের দ্রুত বিচারের দাবিতে আদালত প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (০৭ নভেম্বর) সন্ধ্যার দিকে মানিকগঞ্জ চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত প্রাঙ্গণে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং মীমকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

আসামি মীম জেলা শহরের উত্তর সেওতা এলাকার যুবদল নেতা গোলাম রফি আপুর ছেলে। তিনি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের মানিকগঞ্জ সরকারি দেবেন্দ্র কলেজ শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তাকে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানাধীন ভেন্ডাবাড়ি এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

এর আগে, বৃহস্পতিবার দুপুরে মীমকে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তাকে আদালতে নেওয়ার ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।

ভিডিওতে দেখা যায়, মীমকে আদালতে তোলার খবর শুনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা আদালত প্রাঙ্গণে জড়ো হতে থাকে। এ পরিস্থিতি সামাল দিতে তিনটি পিকআপভ্যানে করে পুলিশ আসে ঘটনাস্থলে। বেশ কিছুক্ষণ শিক্ষার্থীদের বোঝানো হলেও তারা পিছু হটেনি। সন্ধ্যার কিছু সময় পর পর্যাপ্ত পুলিশ প্রহরায় মাথায় হেলমেট ও বুকে জ্যাকেট পরিয়ে মীমকে প্রিজন ভ্যানে তোলার চেষ্টা করা হয়। এ সময় মীমকে উদ্দেশ্য করে ডিম নিক্ষেপ করা শুরু করেন ছাত্র-জনতা। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীরা তাকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন। পুলিশ মীমকে প্রিজন ভ্যানে তুলতে ব্যর্থ হয়ে ফের তাকে আদালতের হাজতখানায় নিয়ে যায়। এরপর খবর পেয়ে সেনাবাহিনী এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করলে তাকে প্রিজন ভ্যানে তুলে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক বলেন, গত ১৮ জুলাই জেলা শহরের খালপাড় এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা ও মারধর করেন মীমসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মীরা। ওই সময় মীমের হাতে ধারালো অস্ত্রও ছিল, যা আমরা পরবর্তীতে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে দেখতে পাই। এ কারণে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে ডিম নিক্ষেপ করে ও পিটুনি দেয়।

এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমান উল্লাহ বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগ নেতা মীমকে আদালত থেকে কারাগারে নেওয়ার সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের তোপের মুখে পড়তে হয়। পরে সেনাবাহিনীর সহায়তায় তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

সোহেল হোসেন/এফআরএস