চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় বন্ধে বিক্ষোভ
চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় বন্ধে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ যানবাহন শ্রমিক ও চালকরা। বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত চাঁদপুর-লক্ষ্মীপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে তারা এই বিক্ষোভ করেন।
এদিকে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভের কারণে প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সড়কে চলাচলকারী কয়েক হাজার যাত্রী।
বিজ্ঞাপন
বিক্ষোভকারীদের দাবি, আজ সকালে টোলের টাকা না থাকায় এক সিএনজি চালককে মারধর করেন টোল আদায়কারীরা। এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করেন ক্ষুব্ধ চালক ও শ্রমিকরা। এ সময় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স এম আই ট্রেডার্সের লোকজন ও সিএনজি চালক-শ্রমিকদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে প্রায় ২ ঘণ্টা পর যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
৫ আগস্টের পর সেতুর টোল আদায় বন্ধ করে দেয় ছাত্র-জনতা। পরে জেলা প্রশাসকের দেওয়া ৭ নির্দেশনা মেনে পুনরায় টোল আদায়ের অনুমতি পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। যদিও সেতুর টোল আদায় বন্ধে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন চালক ও শ্রমিকরা।
সফিক নামের এক সিএনজি চালক বলেন, গতকাল বুধবার থেকে তারা আবার নতুন করে টোল আদায় শুরু করেছে। এ জায়গায় আর কোনো টোল আদায় চলবে না। আমরা গত ২০ বছর ধরে টোল বাবদ টাকা দিয়েছে। আর টাকা দিতে পারব না।
সুমন ও খোকন নামের দুই চালক বলেন, আমাদের এক চালকের কাছে টোলের টাকা না থাকায় তাকে মারধর করেন টোল আদায়কারীরা। আমরা প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
চাঁদপুর সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বাহার মিয়া বলেন, চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় বন্ধে বিক্ষোভ করেছেন বিক্ষুব্ধ যানবাহন শ্রমিক ও চালকরা। এতে ওই সড়কের রাস্তায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপে চলাচল স্বাভাবিক হয়। বর্তমানে টোল আদায় বন্ধ রয়েছে।
জেলা প্রশাসন ও ইজারাদার মেসার্স এমআই ট্রেডিং কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ অক্টোবর বেলা সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় সম্পর্কিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় গত ৫ আগস্ট হতে চাঁদপুর সেতুর টোল আদায় বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং টোল নীতিমালা অনুযায়ী বন্ধ টোল পুনরায় চালু করার বাধ্যবাধকতা সম্পর্কে নির্বাহী প্রকৌশলী, সওজ, সড়ক বিভাগকে অবহিত করা হয়। অতঃপর সভার কার্যপত্র অনুযায়ী বিস্তারিত আলোচনার পর নিম্ন বর্ণিত সিদ্ধান্ত সমূহ গৃহীত হয়।
গৃহীত সিদ্ধান্ত
সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক সবাই একমত পোষণ করেন এবং সভায় উপস্থিতির প্রস্তাব ও ইজারাদারদের সম্মতিক্রমে সেতুতে ইজিবাইক পারাপারে প্রতিবার ১০ টাকার স্থলে ৫ টাকা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়; বর্তমান ইজারার মেয়াদ (২০২৭ সালের ৩০ জুন) শেষে সেতুতে তোল আদায়ের কার্যক্রম বন্ধ করার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে প্রয়োজনীয় যোগাযোগ গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়; যানজট নিদর্শনকল্পে ইজারাদার কর্তৃক দুই স্থানে টোল আদায়ের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়; সেতুর সংযোগ সড়কে টোল আদায়ের সুবিধার্থে মূল সড়কের পাশে বরাদ্দপ্রাপ্তি সাপেক্ষে সড়ক বর্ধিতকরণ (সার্ভিস লেন) করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়; টোল আদায় কার্যক্রম সহজ করার লক্ষ্যে ইজারাদার কর্তৃক জনবল বৃদ্ধিকরণ ও নিয়োজিত কর্মীর গায়ে ইজারা প্রতিষ্ঠানের লোগোসহ পোশাক পরিধানপূর্বক টোল আদায়; টোল আদায় কার্যক্রমে মূল ইজারাদার ও তার নিয়োজিত কর্মী ছাড়া অন্য কেউ টোল আদায় কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে পারবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আনোয়ারুল হক/এমজেইউ