ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এক পক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে অপর পক্ষের তিনজন জখম হয়েছেন। আহত তিনজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

বুধবার (৬ নভেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা পোস্টকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফফার।
এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে উপজেলার চরহরিরামপুর ইউনিয়নের আরজখাঁর ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য সালাম ফকিরের বাড়ির কাছে এ ঘটনা ঘটে।

আহত তিনজন হলেন, চরভদ্রাসনের গাজীরটেক ইউনিয়নের চর সুলতানপুর গ্রামের দোপাডাঙ্গী এলাকার বাসিন্দা সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিশাদ বেগ (৩৫) ও তার ভাই মজিবর বেগ (৫০) এবং তাদের ভাতিজা শোয়েব বেগ (২৪)। আহতদের চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ওই এলাকায় পদ্মা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনে এক পক্ষের নেতৃত্ব দেন হরিরামপুর ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক কে এম ওবায়দুল বারী ওরফে দীপু খাঁ। অপর পক্ষের নেতৃত্ব দেন গাজীরটেক ইউনিয়নের সাত নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য উপজেলা বিএনপির প্রচার সম্পাদক রিশাদ বেগ। এ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।
ওবায়দুল বারী বালু রাখার জন্য এমপি ডাঙ্গী গ্রামের আওয়াল মুন্সীর কাছ থেকে আওয়াল মুন্সীর মালিকানাধীন পদ্মা নদীর পাড়ে এক একর জায়গা ভাড়া নেন।

মঙ্গলবার ইউপি সদস্য রিশাদ বেগ তার ভাই মজিবর বেগ ও ভাতিজা শোয়েব বেগ ভাড়া নেওয়া জায়গায় খনন যন্ত্র নিয়ে বালু রাখার জন্য আইল করতে যান। এ সময় ওবায়দুল বারির সমর্থকরা রামদাসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাদের ওপর হামলা চালিয়ে তাদের তিনজনকে এলোপাথারী কুপিয়ে জখম করে।

এলাকাবাসী আহতদের উদ্ধার করে চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থনান্তর করেন।

চরভদ্রাসন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক বন্ধুসুন্দর সাহা বলেন, আহতদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হলে অবস্থা খারাপ হওয়ায় দ্রুত ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

রিশাদ বেগের ভাই মুরাদ বেগ বলেন, ওই জমির মালিক আওয়াল মুন্সী বিদেশে থাকেন। তিনি ওই জায়গায় আমার ভাই রিশাদকে ভাড়া দেন। গতকাল ওই জমিতে কাজ করতে গেলে ওবায়দুল বারীর নেতৃত্বে আমার দুই ভাই ও এক ভাতিজাকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

কে এম ওবায়দুল বারী বলেন, আমি আওয়াল মুন্সীর কাছ থেকে জমি ভাড়া নেই। একদল লোক জমিটি দখল করতে আসে। এ সময় প্রথমে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। আমি আহতদের রক্ষার চেষ্টা করে ব্যর্থ হই। আমি কিছু বুঝে ওঠার আগেই এসব ঘটনা ঘটে গেছে।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল গফফার বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। যে পক্ষ হামলার শিকার হয়েছে তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। মামলা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

জহির হোসেন/আরকে