সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় মসজিদ ও বালুমহাল নিয়ে বিরোধের জের ধরে মা-ছেলেকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় হাফিজুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ড ও সাতজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত দায়রা জজ-১ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ এরফান উল্লাহ আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় প্রদান করেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত হাফিজুল ইসলাম উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব মহেশপুর গ্রামের শাহজাহান প্রামাণিকের ছেলে। এ ছাড়া যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন দুলাল, মো. বাচ্চু মিয়া, মো. দুলাল সরকার, মো. মাসুদ উল্লাহ রতন, মো. রহমত উল্লাহ পান্না, মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. বদিউজ্জামান।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ওই আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) অ্যাডভোকেট মো. আবু বক্কার সিদ্দিক বলেন, অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় একজনকে মৃত্যুদণ্ড ও ৭ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এ ছাড়া অপরাধ প্রমাণিত না হওয়ায় দুইজনকে খালাস প্রদান করেছেন আদালত।

মামলা সূত্রে জানা যায়, উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব মহেষপুর গ্রামে মসজিদ ও বালুমহাল নিয়ে আসামিদের সঙ্গে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য আলতাফ হোসেন মুকুলের বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে একাধিক মামলাও রয়েছে। এই বিরোধের জের ধরে আলতাফ হোসেন মুকুলকে হত্যার পরিকল্পনা করে উল্লাপাড়া উপজেলার পূর্ব মহেষপুর গ্রামের আবুল কালাম আজাদ ও তার সহযোগীরা। এর প্রেক্ষিতে ২০১৯ সালের ২৬ জুন রাতে আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বে আলতাফ হোসেন মুকুলের বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে চাপাতি দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনাটি তার মা রেজিয়া খাতুন দেখে ফেলায় তাকেও চাপাতি, ছুরি ও রামদা দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং উভয়ের পায়ের রগ কেটে মৃত্যু নিশ্চিত করে।

এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী শামীম আরা বাদী হয়ে আবুল কালাম আজাদসহ ২১ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ এ ঘটনায় ৭ আসামিকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠায়। পরে মামলায় ১১ জনের নামে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ। আদালতে ২০ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য উপস্থাপন করেন। দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক আজ এই রায় প্রদান করেন।

শুভ কুমার ঘোষ/এমজেইউ