সংঘর্ষে নয়, বরিশালের মায়ার মৃত্যু হয়েছে রোগে
বরিশাল নগরীর ভাটারখাল বস্তির বাসিন্দা মায়া বেগমের মৃত্যু সংঘর্ষে নয়, রোগের কারণে হয়েছে বলে দাবি করেছে প্রতিপক্ষ গ্রুপ। সোমবার (৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে হাসপাতালে ভর্তির কাগজ, ডাক্তারের দেওয়া চিকিৎসাপত্র উত্থাপন করে এ দাবি করে তারা।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, রোগে আক্রান্ত হয়ে মায়া বেগমের মৃত্যু হলেও কয়েকদিন আগে ঘটে যাওয়া সংঘর্ষের সঙ্গে যোগসূত্র করে মায়া বেগমের পরিবার সুবিধা নেওয়ার পরিকল্পনা করছিল। মূলত প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পরিকল্পিতভাবে মায়া বেগমকে হত্যার মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়।
বিজ্ঞাপন
সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন ভাটারখাল বস্তির বাসিন্দা মোসা. রশ্নি, সুমি বেগম ও নিপু আক্তার।
লিখিত বক্তব্যে নিপু আক্তার বলেন, ভাটার খাল কলোনির বাসিন্দা মায়া বেগম (৩০) হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রোববার (৩ নভেম্বর) সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে শেবাচিম হাসপাতালের মেডিসিন বিভাগের ইউনিট-২ তে ভর্তি হলে ওই দিনই সন্ধ্যা ৬টা ১০ মিনিটে ওই ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মায়া আগে থেকেই শারীরিকভাবে অসুস্থ ছিলেন। যা কলোনির সকলেই জানে। হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মায়ার মৃত্যুর ঘটনাকে হামালায় আহত হয়ে মারা গেছে বলে প্রচারণা চালাচ্ছে প্রতিপক্ষ।
কলোনিতে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২৮ অক্টোবর বিকেল থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দফায় দফায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। আহতদের মধ্যে মায়া ছিল না। তখন মায়া আহত হয়নি এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়নি। তাছাড়া মারামারিতে আহত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয় সার্জারি বা অর্থপেডিক্স ওয়ার্ডে। একই সাথে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে আহত রোগীর ভর্তির ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেসের সিল দেওয়া হয়। কিন্ত মায়ার ভর্তির ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেসের সিল ছিল না।
প্রকৃতপক্ষে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়া মায়া বেগমের মৃত্যুকে হত্যা বলে প্রচারণা চালাচ্ছে। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা। যে কেউ শেবাচিম হাসপাতালে রোগী মায়ার ভর্তির ব্যবস্থাপত্র শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তদন্ত করলে হাতেনাতে প্রমাণ মিলবে। অথচ এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার (৩ নভেম্বর) রাতে মায়ার মৃত্যুর বিচারের দাবিতে পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেছে প্রতিপক্ষ। যা উদ্দেশ্যমূলক। একই সাথে হত্যা মামলা দায়েরের পরিকল্পনা করে আমাদেরকে হয়রানি করার পরিকল্পনা নিয়েছে।
এ বিষয়ে কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল মায়া বেগমের মৃত্যুর ঘটনায় এখন পর্যন্ত থানায় কেউ অভিযোগ নিয়ে আসেনি। আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, মায়া বেগম হাসপাতালে ভর্তির কারণ হিসেবে উল্লেখ আছে শ্বাসকষ্ট। দীর্ঘদিন ধরেই তার যক্ষ্মসহ নানান রোগ ছিল। অ্যাসাল্ট হলে হাসপাতালেই ব্যবস্থাপত্রে পুলিশ কেস সিল দিত। তা নেই। আপত দৃষ্টিতে সংঘর্ষে নিহত মনে হচ্ছে না। তারপরও কারো অভিযোগ থাকলে থানায় এসে অভিযোগ দিতে হবে। আমরা তদন্ত করে দেখব।
সৈয়দ মেহেদী হাসান/আরএআর