কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে আপন দুই ভাইকে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলার এজাহারভুক্ত পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলায় মোট ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৮-১০ জনকে।

রোববার (৩ অক্টোবর) দুপুরে নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী দৌলতপুর থানায় মামলাটি করেন। হত্যাকারীদের ফাঁসি দাবি করেছেন নিহতের পরিবার।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আওয়াল কবির মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে বুধবার (৩০ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার সাতারপাড়া গ্রামের বাজারে পূর্বশত্রুতার জেরে আপন দুই ভাইকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। ময়নাতদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) বাদ আসর জানাজা শেষে সাতারপাড়া গোরস্তানে তাদের মরদেহ পাশাপাশি দাফন করা হয়।

এ ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আসমত, সাইফুল ও জামান। গুরুতর আহত আকবর ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

নিহতরা হলেন—দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের সাতারপাড়া গ্রামের রমজান মণ্ডলের ছেলে হামিদ (৫০) ও নজরুল ইসলাম মন্ডল (৪৫)। নজরুল ব্যবসা করতেন আর হামিদ কৃষক।

নিহতের পরিবার ও স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। তাদের এমন মৃত্যুতে গ্রামের মানুষ নির্বাক। পুরো গ্রামে শোকের মাতম চলছে। আমরা খুনিদের ফাঁসি চাই।

মামলার বাদী ও নিহত নজরুল ইসলামের ছেলে সুরুজ আলী বলেন, ‘আমি, আমার আব্বা নজরুল ইসলাম ও আমার চাচা আব্দুল হামিদ বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে সাতারপাড়া বাজারে বসে চা খাচ্ছিলাম। এ সময় সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষ পিয়াদা, বিশ্বাস ও প্রামানিক বংশের লোকজন পিস্তল, রামদা, চাপাতি ও দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্যে হামলা করেন। আমার চোখের সামনে আব্বা ও চাচাকে হত্যা করেছে, আমি বেঁচে গেছি। প্রকাশ্য দিবালোকে তারা এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে তাদের সবাইকে আমি চিনি। পাঁচ মিনিটের মধ্যে হত্যা করে পালিয়ে গেছে তারা। বাজারের সবাই তাদের চেনেন। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আমাদের চারজন। আমার আব্বা ও চাচা ঘটনাস্থলেই মারা যান। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই।

দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ আওয়াল কবির বলেন, সামাজিক দ্বন্দ্ব ও পূর্ব শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন দুই ভাই হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় মোট ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়াও এই মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে আরও ৮-১০ জনকে।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যেই পাঁচ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বাকি আসামিদের গ্রেপ্তার করার জন্য অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। অপরাধীদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে।

রাজু আহমেদ/এএমকে