ফেনীতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি মো. কামাল উদ্দিন ভূঞাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শনিবার (২ নভেম্বর) সকালের দিকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান র‍্যাব।  

গ্রেপ্তার কামাল উদ্দিন ফেনী পৌরসভার পশ্চিম রামপুর এলাকার মৃত আলী নেওয়াজের ছেলে। তিনি পৌর যুবলীগের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। 

র‍্যাব-৭ সূত্র জানায়, ৫ আগস্টের পর থেকে কামাল উদ্দিন আত্মগোপনে চলে যায়। শুক্রবার (১ নভেম্বর) দিবাগত রাতে পৌরসভার পশ্চিম রামপুর চৌরাস্তা এলাকা থেকে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত কামাল শহরের পুরাতন জেল রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে জাফর আহম্মদ (৫৩) নামে এক টমটম চালককে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় এজাহারনামীয় আসামি। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ৩ আগস্ট শহরের ট্রাংক রোডে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে টমটম চালক জাফর আহাম্মদ স্বেচ্ছায় অংশগ্রহণ করেন। আন্দোলনে তার অংশগ্রহণের বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন অনলাইনে প্রকাশ হয়। ওইদিন শর্শদি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জানে আলম ভূঁইয়া ও আসামি কামাল উদ্দিনসহ আরও ১০-১১ জন আসামি জাফরের বাড়িতে গিয়ে হত্যার হুমকি দেন। ভয়ে স্ত্রী আছিয়া স্বামীকে সেদিন বাসায় আসতে নিষেধ করেন। জাফরও তার স্ত্রীর কথা মতো সেদিন আর বাসায় যায়নি। পরদিন ৪ আগস্ট দুপুরের দিকে জাফরকে ফেনী শহরের পুরাতন জেল রোডস্থ জেলা কারাগারের সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। খবর পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তা থেকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় গত ৫ সেপ্টেম্বর নিহত জাফরের স্ত্রী আছিয়া বেগম বাদী হয়ে ২০৫ জনের নাম উল্লেখ ও আরও ১০০-১০৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে ফেনী মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ফেনী-৩ আসনের সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী এবং ফেনী-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন হাজারীসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়েছে। 

এ ব্যাপারে ফেনী মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) ইকবাল হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, গ্রেপ্তার কামাল আন্দোলনে জাফর আহম্মদ হত্যা মামলার এজাহারনামীয় আসামি। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। 

তারেক চৌধুরী/আরকে