সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে সাইফুল ইসলাম নামে এক কৃষককে হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদের প্রত্যেককে ৫ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) দুপুরে সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বিচারক কানিজ ফাতিমা আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় দেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার জয়ানপুর গ্রামের আবু বক্কার সিদ্দিকের ছেলে শাকিল শেখ (১৯), একই গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে নায়েব আলী (৪০) ও সলঙ্গা থানার ঘুরকা গ্রামের হযরত আলীর ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (৪২)।

বিষয়টি নিশ্চিত করে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ দ্বিতীয় আদালতের বেঞ্চ সহকারী (পেশকার) মোহাম্মদ আলী বলেন, আদালত দীর্ঘ সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে আজ আসামিদের উপস্থিতিতে তিনজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন। এছাড়া অন্তিম দাস নামে এক আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে। আদালতে হাজির সাজাপ্রাপ্ত তিনজনের মধ্যে দুইজন জামিনে ছিলেন ও একজন জেল হাজতে ছিলেন। রায় ঘোষণার পরে সবাইকে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মামলার অভিযোগপত্র সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের ১০ অক্টোবর রাত ৮টার দিকে কৃষক সাইফুল ইসলাম তার স্ত্রী আলেয়া খাতুনকে সঙ্গে নিয়ে চা খাওয়ার জন্য বাড়ির পাশের বজলুর রহমানের চায়ের দোকানে যান। এ সময় শ্রী অন্তিম দাস নামে এক যুবক কৃষক সাইফুল ইসলামকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর থেকে কৃষক সাইফুল ইসলাম আর বাড়ি ফেরেননি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

জিডির তদন্তকালে পুলিশ শাকিল শেখ নামে এক যুবককে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করে। তখন তিনি জানান- আসামি আব্দুর রাজ্জাক, নায়েব আলী, শ্রী অন্তিম দাসসহ অজ্ঞাত ৬-৭ জন ব্যক্তি সলঙ্গা থানার ফরিদপুর এলাকায় নৌকা করে তাস খেলা শেষ করে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী কৃষক সাইফুল ইসলামকে শ্বাসরোধে হত্যা করে ঘুরকা খালের কচুরি পানার মধ্যে ঢেকে রাখেন। পরে ১৩ অক্টোবর সকালে পুলিশ, তার মরদেহ উদ্ধার করে।

এ ঘটনায় নিহত সাইফুলের স্ত্রী বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৬-৭ জনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলার সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে আদালতের বিচারক আজ তিন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

শুভ কুমার ঘোষ/এফআরএস